[বিঃদ্রঃ লেখাটির সাথে যুক্ত ভিডিওটিও দেখুন যেখানে বেদ থেকে প্রমাণ দেখানো হয়েছে যে, ঈশ্বর নিরাকার নন এবং সৃষ্টি থেকে উর্ধ্বে পৃথক অবস্থায় বিরাজমান। ভিডিওটির সম্পূর্ণ অংশ দেখতে এই লিঙ্কে যেতে পারেন - https://youtu.be/r0FFnnGZhLw
তবে লেখাটি সম্পূর্ণ না পড়ে দয়া করে মন্তব্য করবেন না।]
আল্লাহ সর্বত্র সশরীরের বিরাজমান নন, অথবা আল্লাহর অংশও সৃষ্টিতে বিরাজমান নয়! সর্বত্র বিরাজমান হওয়ার আকিদা হিন্দুদের আকিদা। বরং আহলে সুন্নাত আল-জামাআত এর আকিদা হল আল্লাহ তাআলা আরশের উর্ধ্বে বিরাজমান এবং তিনি জ্ঞান ও ক্ষমতার দ্বারা সর্বত্র বিরাজমান। অর্থাৎ সৃষ্টি থেকে পৃথক অবস্থায় বিরাজমান হয়েও আল্লাহ তাআলা সকল কিছুকে নিয়ন্ত্রণ করতে, দেখতে, জানতে সক্ষম।
"....(বর্ণনাকারী মুআবিয়া ইবনুল হাকাম আস-সুলামী (রাঃ) বলেন) আমার একটি দাসী ছিল। সে উহুদ ও জাওয়ানিয়ার দিকে আমার ছাগল চরাত। একদিন আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখি, একটি একটি বাঘ এসে একটি ছাগল নিয়ে গেল। যেহেতু আমিও মানুষ, সেহেতু অন্যান্য মানুষের মত আমারও রাগ এসে গেল। আমি তাকে একটি চড় বসিয়ে দিলাম। তারপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। তিনি আমার এই কাজকে অত্যন্ত অপছন্দ করলেন।
আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি কি তাকে আযাদ করে দিব? তিনি বললেন, তাকে আমার নিকট নিয়ে এসো আমি তাকে তার নিকট নিয়ে এলাম।
**তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ কোথায় আছেন? সে বলল, আকাশে।**
তিনি বললেন, আমি কে? সে বলল, আপনি আল্লাহর রাসুল।
**তখন তিনি বললেন, ওকে আযাদ করে দাও। কেননা ও মু'মিনা।"**
(সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) ১০৮২/হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)) source - http://www.hadithbd.com/share.php?hid=8871
.
.
ءَاَمِنۡتُمۡ مَّنۡ فِی السَّمَآءِ اَنۡ یَّخۡسِفَ بِکُمُ الۡاَرۡضَ فَاِذَا ہِیَ تَمُوۡرُ ﴿ۙ۱۶﴾
"তোমরা কি নিশ্চিত আছ যে, **আকাশে যিনি রয়েছেন** তিনি তোমাদেরকে সহ ভূমিকে ধ্বসিয়ে দিবেন না, আর ওটা আকস্মিকভাবে থর থর করে কাঁপতে থাকবে?" (আল-কোরআন, ৬৭:১৬)
"অর্থাৎ, **মহান আল্লাহ যিনি আসমান অর্থাৎ, আরশের উপর সমাসীন।** এখানে কাফেরদেরকে ভয় দেখানো হচ্ছে যে, আসমানের সেই সত্তা যখন ইচ্ছা তখনই তোমাদেরকে যমীনে ধসিয়ে দিতে পারেন। অর্থাৎ, যে যমীন তোমাদের বাসস্থান এবং তোমাদের রুযীর উৎস ও ভান্ডার, সেই শান্ত ও স্থির যমীনের মধ্যে মহান আল্লাহ কম্পন সৃষ্টি করে তা তোমাদের ধ্বংসের কারণ বানাতে পারেন।"
(তাফসিরে আহসানুল বয়ান)
.
.
اَلرَّحۡمٰنُ عَلَی الۡعَرۡشِ اسۡتَوٰی ﴿۵﴾
"পরম করুণাময় আরশের ওপর উঠেছেন[১]।" (আল-কোরআন, ২০:৫)
[১] এ আয়াতে আল্লাহর একটি ক্রিয়াবাচক গুণ সাব্যস্ত করা হয়েছে। সেটি হচ্ছে استواء বা আরশের উপর উঠা। ইমাম মালেককে এ গুণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, استواء এর অর্থ জানা আছে। তবে তার ধরন (كيفيت) জানা নেই। এর প্রতি ঈমান রাখা ওয়াজিব এবং ধরন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা বিদআত। এ নীতিটি আল্লাহর সকল গুণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। (Bengali - Bayaan Foundation)
.
.
যদি আপনি হিন্দু গোষ্ঠীগুলোর মতবাদগুলো দেখেন, তবে দেখবেন যে, ঈশ্বর চূড়ান্তরূপে নিরাকার আর সর্বত্র বিরাজমান - এই ধারণা সকল হিন্দুগোষ্ঠীর নয়। এই ধারণা মায়াবাদী, আর্যসমাজ এরকম কিছু গোষ্ঠীর আছে। কিন্তু বৈষ্ণব গোষ্ঠী এটা মনে করে যে, ঈশ্বর সৃষ্টি থেকে পৃথক অবস্থায় বিরাজমান।
ভগবতগীতার এই শ্লোকটি দেখুন:
ন চ মত্স্থানি ভূতানি পশ্য মে যোগমৈশ্বরম্৷
ভূতভৃন্ন চ ভূতস্থো মমাত্মা ভূতভাবনঃ৷৷৫
অর্থ: "যদিও সব কিছুই আমারই সৃষ্ট তবুও তারা আমাতে অবস্থিত নয়। যদিও আমি সমস্ত জীবের ধারক এবং যদিও আমি সর্বব্যাপ্ত তবুও আমি সমস্ত সৃষ্টির উৎস।" (গীতা, ৯:৫)
"ন" অর্থ কখনই না; "মত্স্থানি" অর্থাৎ আমার মধ্যে অবস্থিত; "ভূতানি" অর্থ সমস্ত সৃষ্ট জীব (উৎস - https://asitis.com/9/5.html )। অর্থাৎ সৃষ্ট জীব আমার মধ্যে অবস্থিত নয়। অর্থাৎ এখানে কৃষ্ণ বলছে, সে হল সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা আর সৃষ্টি তার থেকে পৃথক অবস্থায় রয়েছে।
কৃষ্ণকে এখানে উহ্য রাখলে, মূল বক্তব্য এখান থেকে পাওয়া যাবে, আর সেটা হল সগুণ ঈশ্বর হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী সৃষ্টির থেকে পৃথক অবস্থায় বিরাজমান।
এছাড়াও ঋগবেদ ১০ নং মণ্ডলের ৩১ নং সূক্তের ৮ নং মন্ত্র বলছে,
"দ্যুলোক ও ভূলোক ইঁহারাই শেষ নহেন, ইহাদিগের উপর আরো এক আছে। তিনি প্রজা সৃষ্টিকর্ত্তা, তিনি দ্যুলোক ও ভূলোক ধারণ করেন..." (ঋগ্বেদ সংহিতা/মণ্ডল নং ১০/সূক্ত নং ৩১/মন্ত্র নং ৮; অনুবাদ: শ্রীরমেশচন্দ্র দত্ত)
অনুবাদক শ্রীরমেশচন্দ্র দত্ত এই মন্ত্রের টীকাতে (সায়নাচার্যের টীকা) উল্লেখ করে বলছেন,
"যিনি দ্যুলোক ও ভূলোকেরও উপর আছেন, যিনি দ্যুলোক ও ভূলোক ধারণ করেন, যিনি অন্নের প্রভূ ও প্রজার সৃষ্টিকর্ত্তা, যিনি সূর্য্যের আকাশ পরিক্রমের পূর্ব্ব হইতে আছেন এবং যিনি স্বয়ম্ভু, তিনি কে? আমি অনুমান করি ঋষি-সকল দেবগণের উপরস্থ, সকল দেবগণের পূর্ব্বস্থ, এক পরমেশ্বরের অনুভব করিতে সক্ষম হইয়াছেন।"
(ঋগ্বেদ সংহিতা: সপ্তম অষ্টক/অধ্যায় ৭/টীকা নং ২/অনুবাদ: শ্রীরমেশচন্দ্র দত্ত/মুদ্রণ সন: ১৮৮৬)
তাহলে সর্বত্র বিরাজমান কেন বলা হয়?
এর উত্তর আগের শ্লোকে আছে,
"অব্যক্ত রূপে আমি সমস্ত জগতে ব্যাপ্ত আছি। সমস্ত জীব আমাতেই অবস্থিত কিন্তু আমি তাতে অবস্থিত নই।" (গীতা, ৯:৪)
এখানে "অব্যক্তমূর্তিনা" এর অর্থ হল unmanifested বা যা সগুণে প্রকাশিত হয় নি (উৎস - https://asitis.com/9/4.html ) বা, একে নির্গুণও বলা যেতে পারে।
অর্থাৎ নির্গুণ বা অব্যক্ত রূপে ঈশ্বরকে সর্বত্র বিরাজমান বলা হয়ে থাকে।
এর মানে কী?
এর মানে হল, ঈশ্বরের আধ্যাত্মিক দেহের অংশ রূপান্তরিত হয়ে জগত তৈরি হয় আর তাই যেহেতু জগত ঈশ্বরের অংশ, কিন্তু ঈশ্বর জগত থেকে পৃথক, তাই ঈশ্বরের অংশের শক্তি সৃষ্টির মধ্যে বিরাজ করে। এই শক্তিকে "ব্রহ্ম", "নির্গুণ ব্রহ্ম", "নিরাকার ঈশ্বর", "ব্রহ্মজ্যোতি" ইত্যাদি বলে অভিহিত করা হয়।
এখানে স্বামী প্রভুপাদ বিষয়টিকে এভাবে ব্যাখ্যা করছেন,
"..যেভাবে সূর্যালোক মহাবিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে, তেমনিভাবে ভগবানের শক্তিও সৃষ্টির মধ্যে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এবং সকলকিছুই সেই শক্তির মধ্যেই বিরাজ করছে..."
"Just as the sunshine is spread all over the universe, the energy of the Lord is spread all over the creation, and everything is resting in that energy."
source - https://asitis.com/9/4.html
.
.
আর ঠিক এই আকিদাই পোষণ করে কবরপূজারী, মাজারপূজারী বিদআতীরা যারা আজকাল জাল হাদিস বানিয়ে প্রচার করে যে, আল্লাহ তাঁর নূর থেকে সমস্ত মাখলুককে সৃষ্টি করেছেন! নাউযুবিল্লাহ!
এখানে পার্থক্য মূলত এই জায়গাতে যে, দুই ধর্মই বলছে যে, সৃষ্টিকর্তা একজনই, কিন্তু হিন্দুধর্ম অনুযায়ী ঈশ্বরের অংশ হতে সৃষ্টি এসেছে আর ইসলামের সহিহ আকিদা অনুযায়ী, আল্লাহ আরশের উর্ধ্বে সৃষ্টি থেকে সম্পূর্ণ পৃথক, যেখানে সৃষ্টি কখনই তাঁর অংশ নয়।
সৃষ্টি যদি ঈশ্বরের অংশ হয়, তবে সৃষ্টিকে পুজো করাও জায়েজ হয়ে যায়। আর মূর্তিপূজাও তাই জায়েজ হিন্দুধর্মে। এই শ্লোকটি দেখুন,
"পরমাত্মারূপে আমি সকলের হৃদয়ে বিরাজ করি। যখন কেউ দেবতাদের পূজা করতে ইচ্ছা করে আমি তাদের শ্রদ্ধানুসারে সেই সেই দেবতাদের প্রতি ভক্তি বিধান করি।" (গীতা, ৭:২১)
"যারা ভক্তিপূর্বক অন্য দেবতাদের পূজা করেন তারাও আমারই পূজা করেন।" (গীতা, ৯:২৩)
তাহলে প্রশ্ন ওঠে যে, হিন্দুশাস্ত্রে যে সকল শ্লোকে, মন্ত্রে প্রকৃতিপূজা, মূর্তিপূজার নিন্দা করা হয়েছে, সেগুলো কী? সেগুলো দিয়ে সৃষ্টিপূজা নিম্নতর বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ সেগুলোকে নিম্ন পর্যায়ের উপাসনা বলা হয়েছে। কিন্তু সেগুলো হারাম বা নিষিদ্ধের ক্যাটাগরিতে নেই। যে গোষ্ঠী তাকে নিষিদ্ধের ক্যাটাগরিতে এনেছে, তারা হল আর্য সমাজ। অথচ এই আর্য সমাজ ঠিকই আবার যজ্ঞ করে আগুনের পূজার মাধ্যমে শ্রদ্ধেয় লোকজনদের সম্মান প্রদর্শন আর শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে জীবন্ত মানুষের পূজা করার জন্যও উৎসাহিত করে।
যজ্ঞের মাধ্যমে আগুন পূজার কথা আর্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা দয়ানন্দ সরস্বতীর নিজের বক্তব্যে:
"I hold that the performance of yajna (যজ্ঞ) is most commendable. It consists in showing due respect to the wise, and the learned...."
(Satyarth Prakash (The Light of Truth)/page 729)
.
.
মৃত বিষয়ের পূজা করার প্রতি নিন্দা, অথচ জীবন্ত মানুষের পূজা করার প্রতি উৎসাহ:
"Devapujaa (দেবপূজা) consists in showing honor to the wise and the learned, to one's father, mother and preceptor, to the itinerant preachers of truth, to a just ruler, to those who lead righteous lives, to women who are chaste and faithful to their husbands, to men who are devoted and loyal to their wives. The opposite of this is called Adeyapujaa.
**The worship of the above named persons I hold to be right, while the worship of the dead, inert objects I hold to be wrong."**
(Satyarth Prakash (The Light of Truth)/page 728)
তাহলে কী বুঝলেন? সৃষ্টিপূজা হিন্দুধর্মে অনুমোদিত।
এখন এই কথাটা গীতাতে এভাবে বলা হচ্ছে:
"যে যেভাবে আমার প্রতি আত্মসমর্পণ করে, প্রপত্তি স্বীকার করে, আমি তাকে সেইভাবেই পুরষ্কৃত করি। হে পার্থ, সকলেই সর্বতভাবে আমারই পথ অনুসরণ করে।" (গীতা, ৪:১১)
হিন্দুধর্মের মত পৃথিবীর যেকোনো পৌত্তলিকতাকে উঠান, সেখানে দেখবেন, এই বিভিন্ন টাইপের সৃষ্টিপূজার কথা আছে। এখানে দেব-দেবীও এই সৃষ্টির মধ্যেই পড়ছে বা একে আমরা মনুষ্য সৃষ্ট ধারণাই ধরে নিচ্ছি।
এখানে তাই পৌত্তলিকতায় মূল দর্শনটা হল, পৌত্তলিকরা সাধারণত এভাবে বলবে না যে, তারা সৃষ্টিপূজা করে বা মূর্তিপূজা করে। বরং তাদের concept টা হল, তারা এই সৃষ্টির পিছনের আসল spirit এর পূজা বা আরাধনা করে। pagan দের এই মতবাদে তারা আসলে সমস্ত সৃষ্টিতে আত্মার উপস্থিতি কল্পনা করে আর এখানে তাই indian paganism এর মত উন্নত টাইপের paganism এও এই একই ধারণা কাজ করে যে, সবকিছুর মধ্যে ঈশ্বরের অংশ, অথবা তার শক্তি বিরাজমান।
এখানেই হল মূল পার্থক্য যা আমার মনে হয় ইসলামিক দাঈদের দাওয়াহ এর সময় উল্লেখ করে দেখিয়ে দেওয়া উচিৎ যে, সৃষ্টি আল্লাহ তাআলার অংশ নয়। যদি সৃষ্টি আল্লাহর অংশ হত, তাহলে ইসলাম সৃষ্টিপূজার বিরুদ্ধে বলত না। কিন্তু মহান আল্লাহ স্পষ্টভাবে কোরআনে সব রকমের সৃষ্টিপূজাকে নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন।
👉 মৃত মূর্তির মাধ্যমে পূজায় নিষিদ্ধতাঃ
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنَّمَا الۡخَمۡرُ وَ الۡمَیۡسِرُ وَ الۡاَنۡصَابُ وَ الۡاَزۡلَامُ رِجۡسٌ مِّنۡ عَمَلِ الشَّیۡطٰنِ فَاجۡتَنِبُوۡہُ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ﴿۹۰﴾
"হে মুমিনগণ, নিশ্চয় মদ, জুয়া, **প্রতিমা-বেদী** ও ভাগ্যনির্ধারক তীরসমূহ তো নাপাক শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।" (আল-কোরআন, ৫:৯০)
👉 মূর্তি ব্যতীত কবর, মাজার, দেবদেবী, মানুষ, প্রকৃতি ইত্যাদি সকল কিছুকে মাধ্যম হিসেবে উপাসনার নিষিদ্ধতাঃ
اَلَا لِلّٰہِ الدِّیۡنُ الۡخَالِصُ ؕ وَ الَّذِیۡنَ اتَّخَذُوۡا مِنۡ دُوۡنِہٖۤ اَوۡلِیَآءَ ۘ مَا نَعۡبُدُہُمۡ اِلَّا لِیُقَرِّبُوۡنَاۤ اِلَی اللّٰہِ زُلۡفٰی ؕ اِنَّ اللّٰہَ یَحۡکُمُ بَیۡنَہُمۡ فِیۡ مَا ہُمۡ فِیۡہِ یَخۡتَلِفُوۡنَ ۬ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِیۡ مَنۡ ہُوَ کٰذِبٌ کَفَّارٌ ﴿۳﴾
"জেনে রেখ, আল্লাহর জন্যই বিশুদ্ধ ইবাদাত-আনুগত্য। আর যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যদেরকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করে তারা বলে, ‘আমরা কেবল এজন্যই তাদের ‘ইবাদাত করি যে, তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেবে।’ যে বিষয়ে তারা মতভেদ করছে আল্লাহ নিশ্চয় সে ব্যাপারে তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দেবেন। যে মিথ্যাবাদী কাফির, নিশ্চয় আল্লাহ তাকে হিদায়াত দেন না।" (আল-কোরআন, ৩৯:৩)
👉 সম্মান প্রদর্শনের জন্য আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও উপাসনায় নিষিদ্ধতাঃ
وَ مِنَ النَّاسِ مَنۡ یَّتَّخِذُ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ اَنۡدَادًا یُّحِبُّوۡنَہُمۡ کَحُبِّ اللّٰہِ ؕ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَشَدُّ حُبًّا لِّلّٰہِ ؕوَ لَوۡ یَرَی الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡۤا اِذۡ یَرَوۡنَ الۡعَذَابَ ۙ اَنَّ الۡقُوَّۃَ لِلّٰہِ جَمِیۡعًا ۙ وَّ اَنَّ اللّٰہَ شَدِیۡدُ الۡعَذَابِ ﴿۱۶۵﴾
"মানবমন্ডলীর মধ্যে এরূপ আছে - যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে সদৃশ স্থির করে, আল্লাহকে ভালবাসার ন্যায় তারা তাদেরকে ভালবাসে এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে আল্লাহর প্রতি - তাদের প্রেম দৃঢ়তর এবং যারা অত্যাচার করেছে তারা যদি শাস্তি অবলোকন করত তাহলে দেখত, সমুদয় শক্তিই আল্লাহর এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।" (আল-কোরআন, ২:১৬৫)
"আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি যদি কোনো মানবকে সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তবে স্ত্রীকে তার স্বামীর জন্য সিজদা করার নির্দেশ দিতাম (i.e অর্থাৎ সিজদার করার নির্দেশ এখন আল্লাহ ব্যতীত আর কারও জন্য প্রযোজ্য নয়)।"
[মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) ৩২৫৫, তিরমিযী ১১৫৯, ইবনু মাজাহ ১৮৫৩, ইরওয়া ১৯৯৮, সহীহ আল জামি‘ ৫২৩৯, সহীহ আত্ তারগীর ১৯৪০] হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
source - http://www.hadithbd.com/share.php?hid=68582
.
.
সেক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলা স্থান, কালের আপেক্ষিকতার বাইরে আরশের উর্ধ্বে সৃষ্টি হতে সম্পূর্ণ পৃথক ভাবে এরূপে বিরাজমান যে, কোনো সৃষ্টিই তাঁর অংশ নয়। বরং সমস্ত সৃষ্টি তাঁর ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ যা তাঁর অংশ হতে পৃথক। মহান আল্লাহ ঘোষণা করছেন,
بَدِیۡعُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ اِذَا قَضٰۤی اَمۡرًا فَاِنَّمَا یَقُوۡلُ لَہٗ کُنۡ فَیَکُوۡنُ ﴿۱۱۷﴾
"তিনি আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা এবং যখন তিনি কোন কাজ সম্পাদন করতে ইচ্ছা করেন তখন তার জন্য শুধুমাত্র ‘হও’ বলেন, আর তাতেই তা হয়ে যায়।" (আল-কোরআন, ২:১১৭)
.
"....আল্লাহ উর্ধ্বে, আরশের উপরে আছেন। মহান আল্লাহ নিজের সম্পর্কে বলেন,
﴿ ٱلرَّحۡمَٰنُ عَلَى ٱلۡعَرۡشِ ٱسۡتَوَىٰ ٥ ﴾ [طه: ٥]
“পরম দয়াময় আল্লাহ আরশের উপর উঠেছেন” (ত্বা-হা ৫)।
সত্যিকার অর্থেই আল্লাহ্র সত্ত্বার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমনভাবে তিনি আরশের উপর উঠেছেন; তাঁর আরশের উপর উঠার বিষয়টিকে কোনোরূপ পরিবর্তন-পরিবর্ধন করা যাবে না এবং এটির কল্পিত কোনো আকৃতি যেমন স্থির করা যাবে না, তেমনি কোনো সৃষ্টির সাথে এর কোনোরূপ সাদৃশ্য বিধানও করা চলবে না।
অতএব, আপনি কোনো অবস্থাতেই বলতে পারেন না যে, আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান। কেননা সর্বোচ্চে অবস্থান মহান আল্লাহ্র একটি প্রশংসনীয় বিশেষণ। আর সে কারণেই তো আমরা সেজদাতে বলে থাকি, ‘আমার প্রভু সর্বোচ্চ’।
ইমামগণ একমত পোষণ করেছেন যে, মহান আল্লাহ যমীনে অবতরণ করেন না। যে ব্যক্তি এই আক্বীদা পোষণ করে যে, আল্লাহ তাঁর কোনো সৃষ্টির মধ্যে প্রবিষ্ট হন, সে ব্যক্তির কুফরীতে নিপতিত হওয়ার ব্যাপারেও তাঁরা একমত পোষণ করেছেন..."
[গ্রন্থঃ প্রশ্নোত্তরে সহজ তাওহীদ শিক্ষা.অধ্যায়ঃ তাওহীদ সম্পর্কে প্রশ্ন এবং উত্তর/লেখকঃ আব্দুল আলীম ইবনে কাওসার] source - http://www.hadithbd.com/shareqa.php?qa=1489
.
.
আল্লাহই ভাল জানেন।
.
.
.
- Ahmad Al-Ubaydullaah
Comments
Post a Comment