Skip to main content

ইসলামে নারী কি পুরুষের দাসী?


মুক্তমনারা অনেক নারী স্বাধীনতা নিয়ে লাফালাফি করে। কিন্তু সেই সব পাবলিকরা এই কথাটা কখনও বলে না যে, একজন নারীর ক্ষমতা আছে একটা পুরুষকে তুড়ি মেরে বশ করে ফেলার, কারণ পুরুষ, নারীর প্রতি প্রকৃতিগতভাবে দুর্বল। একজন নারী, পুরুষের প্রতি সহজে দুর্বল হয় না। কিন্তু একজন পুরুষ, একজন নারীর প্রতি সহজেই দুর্বল হয়ে যায়। একজন নারী যখন স্বামীর ঘরে যায়, প্রথমে স্বামী তার শারীরিক আকর্ষণ ও চাহিদার কারণে সেই নারীর প্রতি দুর্বল থাকে। এরপর পুরুষ সেই নারীর প্রতি দুর্বল থাকে তার ঘর সংসারের কাজ ঘুছিয়ে নেওয়ার জন্য। এর মধ্যে পুরুষ যদি শারীরিক সক্ষমতায় অপূর্ণ থাকে, সে ভয় করে যে, তার অক্ষমতার কারণে তার স্ত্রী অন্য কোনো পুরুষের প্রতি ঝুঁকে না পড়ে! এজন্য সেই সকল পুরুষ তার স্ত্রীর প্রতি অনেক বেশি বাধ্য হয়ে পড়ে যাতে তার স্ত্রীকে সে সন্তুষ্ট রাখতে পারে। কিন্তু হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটা অনেক বড় সত্য কথা আমাদের বলে গেছেন যে, পুরুষ সারা জীবন তার সমস্ত শ্রমও যদি নারীর পিছনে দিয়ে দেয়, তবুও সামান্য ত্রুটির কারণে একজন নারী তার স্বামীর প্রতি চরমভাবে অসন্তুষ্ট হয়ে পড়ে। তাই প্রকৃত ঈমানদার নারী হতে হলে একজন নারীকে নিজের নাফসের থেকে আল্লাহ ও রাসূলের নির্দেশকে প্রাধান্য দিতে হবে। আর এজন্যই ইসলাম নারীকে বিশেষভাবে বলেছে স্বামীর প্রতি অনুগত হতে, কেননা এতেই প্রকৃতপক্ষে সংসারে শান্তি আসে যখন একজন ঈমানদার নারী আল্লাহর ওয়াস্তে তার স্বামীকে ভালবাসে ও তার কথাকে গুরুত্ব দিয়ে চলে, যদিও সেটা কখনও কখনও তার ভাল না লাগে (যতক্ষণ না সেটা আল্লাহ ও রাসূলের বিরুদ্ধে যায়)! আর সেই আনুগত্যের মাধ্যমেই পরবর্তীতে নিজেদের মধ্যে ভাল লাগা না লাগা বিষয়গুলো নিয়ে সমঝোতা করা সম্ভবপর হয়। কিন্তু স্ত্রী যদি প্রথমেই দুর্ব্যবহার করে, তবে সেখানে আর সমঝোতা আসে না, যেটা আসে সেটা হল ভুল বোঝা-বুঝি এবং কলহ-বিবাদ।
.
.
বিঃদ্রঃ এখানে "স্বামী" শব্দটি পরিপূর্ণভাবে সঠিক নয়, কেননা এই শব্দ আসলে হিন্দুধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করে যে, স্ত্রী হল দাসী এবং "স্বামী" অর্থ প্রভু। একারণে হিন্দুধর্মে স্ত্রীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বামীকে "পতি" দেবতা হিসেবে পুজো করার জন্য। আমাদের সমাজের সমস্যাটা হল, আমরা এখনও এই ধরণের কন্সেপ্ট থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারি নি। আর মুক্তমনারাও এই চিন্তাধারা নিয়েই ইসলামকে বিচার করতে আসে আর এই চিন্তাধারাতেই ইসলামকে ব্যাখ্যা করে। অথচ ইসলামে "স্বামী" বলতে প্রভু বোঝায় না। বরং এর অর্থ আমাদের পাল্টে দিয়ে "স্ত্রীর সহযোগী" করা উচিৎ, কেননা ইসলামে স্ত্রী, স্বামীর দাসী না, স্ত্রী কেবল আল্লাহর বান্দী। তাই এখানে স্ত্রীকে স্বামীর আনুগত্য করতে বলার অর্থ স্বামীর দাসত্ব করা নয়, বরং আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করা এবং স্বামীর প্রতি সত্যিকার অর্থে ভালবাসার প্রকাশ ঘটানো। স্ত্রী যে স্বামীর দাসী নয়, তা বোঝা যায়, যখন ইসলাম পুরুষকে নির্দেশ দেয় তার স্ত্রীর নিকট প্রিয়পাত্র হয়ে উঠতে। আর একজন স্বামী তখনই স্ত্রীর নিকট প্রিয় হতে সক্ষম হয়, যখন স্ত্রী তার স্বামীর প্রতি সন্তুষ্ট থাকে।
.
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
.
أَكْمَلُ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا وَخِيَارُهُمْ خِيَارُهُمْ لِنِسَائِهِمْ.
.
‘‘সবার চেয়ে পূর্ণ ঈমানদার ব্যক্তি সে, যার চরিত্র সবার চেয়ে সুন্দর এবং ওদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম ব্যক্তি সেই, যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম।’’ (আহমদ)

Comments

Popular posts from this blog

মানহাজ ও মাযাহাব নিয়ে যত দ্বন্দ্বের জবাব....

[Special thanks to brother Mainuddin Ahmad for providing some important reference] . মানহাজ অর্থ পথ (path) অথবা পদ্ধতিগত বা নিয়মগত বা প্রণালিগত বিদ্যা (Methodology)। মানহাজ বললে তাই তাকে দুই ভাবে ভাবা হয় - ১) সহিহ মানহাজ, ২) ভ্রান্ত বা বাতিল মানহাজ। . সহিহ মানহা...

কৃষ্ণ কি আল্লাহর নবী ছিল?

এই প্রশ্নটা আমাকেও করা হয়েছে সম্ভবত কয়েকবার। কিন্তু প্রশ্নের উত্তরটা বড়ই জটিল। কারণ এর কোনো যথাযথ উত্তর আমাদের জানা নেই। যদি কৃষ্ণের গোপীদের সাথে লীলার কাজকে সত্য বলে...

ভগবতগীতার বর্ণভেদ নিয়ে ভক্তদের ভণ্ডামির জবাব

============================ চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ৷ তস্য কর্তারমপি মাং বিদ্ধ্যকর্তারমব্যয়ম্৷৷১৩ অর্থ:  "প্রকৃতির তিনটি গুণ এবং কর্ম অনুসারে আমি মনুষ্য সমাজে চারটি বর্ণ...