Skip to main content

হিন্দুরা আল্লাহকে একবার সাকার, একবার নিরাকার বললে কী জবাব দেবেন?


সংক্ষিপ্ত জবাবটা এমনভাবে দিতে পারেনঃ

মানুষ তার সীমিত জ্ঞানে ভাবত পদার্থের কেবল তিনটি অবস্থা - কঠিন, তরল, বায়বীয়। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে আমরা বুঝতে পেরেছি যে, পদার্থের অসংখ্য অবস্থা রয়েছে এইতিনটি অবস্থার মধ্যে ও বাইরেও। কিন্তু সীমিত জ্ঞানে আমরা কেবল পদার্থকে এই তিনটি অবস্থাতেই উপলব্ধি করি। কেবল সৃষ্টিকেই আমরা ইন্দ্রিয় দিয়ে পুরোপুরি অনুভব করতে পারছি না, সেখানে স্রষ্টা যিনি সমস্ত সৃষ্টির থেকেও উর্ধ্বে, তাঁর সম্পর্কে সীমিত পঞ্চইন্দ্রিয়ের উপলব্ধির সাথে তুলনাকরে সাকার নিরাকারে কমেন্ট করা মূর্খতার পরিচয়।

আল্লাহ তাআলা সাকার নন, এটা আমরা নিশ্চিত৷ কিন্তু নিরাকার যখনই বলা হবে, তখন সেটা হয়ে যাবে "নির্গুণ ব্রহ্ম"। এখানে নির্গুণ হল যা গুণ বা সিফাত দিয়ে প্রকাশ করা যায় না। কিন্তু আল্লাহ তাআলা নির্গুণ নন, কোরআনে আল্লাহর সুরত এর কথা বলা হয়েছে, এখানে সুরত বলতে দৈহিক অঙ্গ নয়, বরং সিফাত বাবৈশিষ্ট্য যা সৃষ্টির সঙ্গে তুলনীয় নয় (আল-কোরআন ১১২:৪ )। হাত, পা, আঙুল ইত্যাদি সবই সিফাত, এগুলো মনুষ্য বোধগম্য ভাষায় বলা যাতে উপলব্ধির কাছাকাছি যাওয়া যায়, কিন্তু যেহেতু আমাদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ, তাই পুরোটা উপলব্ধি সম্ভব নয়, আর এটা আখিরাতের জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে মুমিন বান্দার জন্য ঈমানের পরীক্ষা।

অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা সাকারও নন, নিরাকারও নন, বরং তিনি অচিন্তনীয়, কিন্তু নির্গুণ নন। একারণে কোরআন বিষয়টিকে সহজভাবে বলেছ যে, আল্লাহর সমতুল্য কিছুই নেই।

অন্যদিকে আল্লাহ ব্রহ্ম নন। কারণ ব্রহ্ম বলতে যে নিজের অংশকে বিস্তৃত করে মায়ার মাধ্যমে জগতের আবির্ভাব ঘটায়। অথচ আল্লাহ তাআলা সম্পূর্ণ from nothing থেকে সৃষ্টি করেন যেখানে আল্লাহ ও সৃষ্টি সম্পূর্ণ পৃথক। একারণে বৈদিক সাকার নিরাকারের সীমাবদ্ধ ধারণা দিয়ে ইসলামকে বুঝতে আসলে কিছুই ঠিকমত মাথায় ঢুকবে না!

Comments

Popular posts from this blog

মানহাজ ও মাযাহাব নিয়ে যত দ্বন্দ্বের জবাব....

[Special thanks to brother Mainuddin Ahmad for providing some important reference] . মানহাজ অর্থ পথ (path) অথবা পদ্ধতিগত বা নিয়মগত বা প্রণালিগত বিদ্যা (Methodology)। মানহাজ বললে তাই তাকে দুই ভাবে ভাবা হয় - ১) সহিহ মানহাজ, ২) ভ্রান্ত বা বাতিল মানহাজ। . সহিহ মানহা...

কৃষ্ণ কি আল্লাহর নবী ছিল?

এই প্রশ্নটা আমাকেও করা হয়েছে সম্ভবত কয়েকবার। কিন্তু প্রশ্নের উত্তরটা বড়ই জটিল। কারণ এর কোনো যথাযথ উত্তর আমাদের জানা নেই। যদি কৃষ্ণের গোপীদের সাথে লীলার কাজকে সত্য বলে...

ভগবতগীতার বর্ণভেদ নিয়ে ভক্তদের ভণ্ডামির জবাব

============================ চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ৷ তস্য কর্তারমপি মাং বিদ্ধ্যকর্তারমব্যয়ম্৷৷১৩ অর্থ:  "প্রকৃতির তিনটি গুণ এবং কর্ম অনুসারে আমি মনুষ্য সমাজে চারটি বর্ণ...