Skip to main content

হিন্দুদের প্রসাদ আর কুরবানির পশুর মাংস কি একই ধরণের আচার ক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত?


আল্লাহর নাম বাদে অন্য নামে পশু জবাই করলে সেই খাদ্য আমাদের জন্য হারাম হয়ে যায়।
.
আল-কোরআন ৬:১৪৫
.
قُل لَّآ أَجِدُ فِى مَآ أُوحِىَ إِلَىَّ مُحَرَّمًا عَلَىٰ طَاعِمٍ يَطْعَمُهُۥٓ إِلَّآ أَن يَكُونَ مَيْتَةً أَوْ دَمًا مَّسْفُوحًا أَوْ لَحْمَ خِنزِيرٍ فَإِنَّهُۥ رِجْسٌ أَوْ فِسْقًا أُهِلَّ لِغَيْرِ ٱللَّهِ بِهِۦۚ فَمَنِ ٱضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَلَا عَادٍ فَإِنَّ رَبَّكَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
.
"তুমি বলঃ অহীর মাধ্যমে আমার কাছে যে বিধান পাঠানো হয়েছে তাতে কোন আহারকারীর জন্য কোন বস্তু হারাম করা হয়েছে এমন কিছু আমি পাইনি; তবে মৃত জন্তু, প্রবাহিত রক্ত, শুকরের মাংস এবং যা আল্লাহর নামে যবাহ করা হয়নি তা হারাম করা হয়েছে। কেননা ওটা নাপাক ও শারীয়াত বিগর্হিত বস্তু। কিন্তু যদি কোন লোক স্বাদ আস্বাদন ও সীমা লংঘনের উদ্দেশ্য ব্যতীত নিরূপায় হয়ে পড়ে (তার পক্ষে ওটাও খাওয়া বৈধ)। কেননা আল্লাহ ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহশীল।"
.
আর কুরবানির পশুর রক্ত ও মাংসের আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।
.
আল-কোরআন ২২:৩৭
.
لَن يَنَالَ ٱللَّهَ لُحُومُهَا وَلَا دِمَآؤُهَا وَلَٰكِن يَنَالُهُ ٱلتَّقْوَىٰ مِنكُمْۚ كَذَٰلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمْ لِتُكَبِّرُوا۟ ٱللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَىٰكُمْۗ وَبَشِّرِ ٱلْمُحْسِنِينَ
.
"এগুলোর মাংস ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া। এমনিভাবে তিনি এগুলোকে তোমাদের বশ করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর মহত্ত্ব ঘোষণা কর এ কারণে যে, তিনি তোমাদের পথ প্রদর্শন করেছেন। সুতরাং সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ শুনিয়ে দিন।"
.
.
এই পশু উৎসর্গের প্রথা গ্রিক সমাজেও দেখা যায়। তারাও একইভাবে দেবতাদের খাদ্য হিসেবে পশু উৎসর্গ করত। এমনকি পশুকে বলি দেওয়ার পর সেই বলি দেওয়ার পশুর মাংস থেকে কিছু অংশ আগুনে ছুড়ে দিত যাতে সেই মাংস পুড়ে গন্ধ বাতাসের মাধ্যমে সামনের দেবতার মূর্তির দিকে চলে যায়।
.
"..Following a prayer, he swiftly cut the animal's throat while musicians played flute-like pipes and female worshippers screamed.....
.
**The carcass was then butchered, with some portions thrown on the alter fire so their aromatic smoke could waft upward to the god of the cult. The rest of the meat was then distributed among the worshippers..."**
.
["Ancient Greece: From Prehistoric Times to Hellenistic Times" by Thomas R. Martin]
.
.
ইসলামে এভাবে আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু উৎসর্গ করা হয় না, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টিতে পশুকে উৎসর্গ করা হয়, কিন্তু প্রসাদ হিসেবে নয়।
.
এখানে প্রয়োজনটা আসলে আমাদের। এর মাধ্যমে সেই মাংসকে থালায় করে সাজিয়ে আল্লাহর সামনে হাজির করে আমরা পুজো করি না। আর তারপর উচ্ছিষ্ট খাদ্য হিসেবেও সেই পশুকে প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করি না। আমরা কেবল আল্লাহর নাম স্মরণ করি, আর আল্লাহর নাম প্রতিটি ইবাদতের কাজের পূর্বেই স্মরণ করা হয়, তাই এখানে আল্লাহর উদ্দেশ্যে কিছু উৎসর্গ করা হচ্ছে না। বরং আল্লাহকে স্মরণ করা, তার নির্দেশ পালন করা, মাংসকে দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা, সাদকার মাধ্যমে দরিদ্রদের অর্থ, দ্রব্য দান করা সবই ইবাদতের অংশ। এতে আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই, লাভ নেই, ক্ষতিও নেই৷ প্রয়োজনটা হল আমাদের কেননা আমরাই ইবাদতের প্রকৃতিতে সৃষ্টি হয়েছি আর তাই আমরাই আল্লাহ তাআলার মুখাপেক্ষী। আল্লাহ বলেন,
.
আল-কোরআন ৩৫:১৫
.
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ أَنتُمُ ٱلْفُقَرَآءُ إِلَى ٱللَّهِۖ وَٱللَّهُ هُوَ ٱلْغَنِىُّ ٱلْحَمِيدُ
.
"হে মানুষ! তোমরাই আল্লাহর মুখাপেক্ষী, আর আল্লাহ তিনি তো অভাবহীন, প্রশংসিত।"
.
.
হিন্দুদের গো-হত্যা নিয়ে মিথ্যাচার এর জবাব হিসেবে বিবেকানন্দের বক্তব্যই যথেষ্ট!
.
"...মনে রাখিও, চিরকালই এই-সকল প্রথা ও আচারের পরিবর্তন হইতেছে। এই ভারতেই এমন সময় ছিল, যখন গোমাংস ভোজন না করিলে কোনো ব্রাহ্মণের ব্রাহ্মণত্ব থাকিত না। বেদপাঠ করিলে দেখিতে পাইবে, কোনো বড় সন্ন্যাসী বা রাজা বা অন্য কোনো বড়লোক আসিলে ছাগ ও গোহত্যা করিয়া তাঁহাদিগকে ভোজন করানোর প্রথা ছিল। ক্রমশঃ সকলে বুঝিল-আমাদের জাতি প্রধানতঃ কৃষিজীবী, সুতরাং ভাল ভাল ষাঁড়গুলি হত্যা করিলে সমগ্র জাতি বিনষ্ট হইবে। এই কারণেই গোহত্যা-প্রথা রহিত করা হইল-গোহত্যা মহাপাতক বলিয়া পরিগণিত হইল। প্রাচীন-শাস্ত্রপাঠে আমরা দেখিতে পাই, তখন হয়ত এমন সব আচার প্রচলিত ছিল, যেগুলিকে এখন আমরা বীভৎস বলিয়া মনে করি..."
.
[স্বামী বিবেকানন্দ রচনাবলী/৫ম খণ্ড/ভারতে বিবেকানন্দ/মাদুরা অভিনন্দনের উত্তর]
.
"....Remember these customs have already been changed. There was a time in this very India when, without eating beef, no Brahmin could remain a Brahmin; you read in the Vedas how, when a Sannyasin, a king, or a great man came into a house, the best bullock was killed; how in time it was found that as we were an agricultural race, killing the best bulls meant annihilation of the race. Therefore the practice was stopped, and a voice was raised against the killing of cows. Sometimes we find existing then what we now consider the most horrible customs..."
.
[The Complete Works of Swami Vivekananda/Volume 3/Lectures from Colombo to Almora/Reply to the Address of Welcome at Madura;
source - https://en.m.wikisource.org/wiki/The_Complete_Works_of_Swami_Vivekananda/Volume_3/Lectures_from_Colombo_to_Almora/Reply_to_the_Address_of_Welcome_at_Madura]
.
আমাদের প্রশ্ন হল এই যে, যদি হিন্দু ভাই-বোনেরা কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল পথ, তা তারা নিজেরাই নির্ধারণ করতে পারেন, তাহলে তাদের আর ধর্মগ্রন্থের কী প্রয়োজন???

Comments

Popular posts from this blog

মানহাজ ও মাযাহাব নিয়ে যত দ্বন্দ্বের জবাব....

[Special thanks to brother Mainuddin Ahmad for providing some important reference] . মানহাজ অর্থ পথ (path) অথবা পদ্ধতিগত বা নিয়মগত বা প্রণালিগত বিদ্যা (Methodology)। মানহাজ বললে তাই তাকে দুই ভাবে ভাবা হয় - ১) সহিহ মানহাজ, ২) ভ্রান্ত বা বাতিল মানহাজ। . সহিহ মানহা...

কৃষ্ণ কি আল্লাহর নবী ছিল?

এই প্রশ্নটা আমাকেও করা হয়েছে সম্ভবত কয়েকবার। কিন্তু প্রশ্নের উত্তরটা বড়ই জটিল। কারণ এর কোনো যথাযথ উত্তর আমাদের জানা নেই। যদি কৃষ্ণের গোপীদের সাথে লীলার কাজকে সত্য বলে...

ভগবতগীতার বর্ণভেদ নিয়ে ভক্তদের ভণ্ডামির জবাব

============================ চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ৷ তস্য কর্তারমপি মাং বিদ্ধ্যকর্তারমব্যয়ম্৷৷১৩ অর্থ:  "প্রকৃতির তিনটি গুণ এবং কর্ম অনুসারে আমি মনুষ্য সমাজে চারটি বর্ণ...