Skip to main content

পৃথিবীতে প্রধান প্রধান ধর্মগুলোর মধ্যে এত পথভ্রষ্টতা মনে হয় আর কোনো ধর্মে নেই, যা আছে হিন্দু ধর্মীয় মতপথের মধ্যে!


হিন্দু দর্শনের সর্বোচ্চ স্তর হল মোক্ষলাভ যেটার অর্থ হল ঈশ্বরের অংশের সাথে এক হয়ে যাওয়া। এটা আপনাকে শির্ক এর মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তাকে অপমান করার জন্য এই শিক্ষা দেয় যে, আপনি হলেন তাঁর অংশ।
সর্বোচ্চ স্তরে যাওয়ার জন্য আপনি যখন সেই স্তরের শীর্ষে পৌঁছে গেছেন, তখন জগতের সাথে আপনার আর কোনো বন্ধন থাকবে না। এতে করে আপনি তখন কামের প্রতি আর কোনো আসক্তি অনুভব করবেন না। এর ফলে এই পর্যায়ে আপনার দ্বারা আর কোনো বংশবৃদ্ধি হবে না। এর মানে এটাই যে, হিন্দু দর্শনের চূড়ান্ত ধাপ জীবের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হওয়ার শিক্ষা দেয়।
.
জীবের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হওয়ার জন্য আপনাকে বৈরাগ্য অর্জন করতে হবে। ফলে উচ্চ স্তরে আপনাকে সন্ন্যাস এর মাধ্যমে জীবনযাপন করতে হবে - সেটা নিষ্কাম কর্মের মাধ্যমে গৃহে থেকে সন্ন্যাসীই হোক না কেন! এতে করে আপনার মধ্যে যদি কোনো হরমোনের প্রাকৃতিক চাপের ফলে আকাঙ্ক্ষা আসেও, তবুও তাকে ব্রহ্মচর্যের মাধ্যমে জোর করে দমিয়ে রাখতে হবে আর যোগের মাধ্যমে আসক্তি ত্যাগ করে জীবের বিলুপ্তির পথ "মোক্ষ" এর দিকে যেতে হবে!
.
যদি আপনি নিজের কামনা দমন করতে না পারেন আর শারীরিক বাসনা মিটিয়ে থাকেন শারীরিক স্বস্তির জন্য, তবে সেটাও অনুমোদিত, কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনি নীচু স্তরে আছেন। গৃহে থেকে নিষ্কাম কর্মের মাধ্যমে সন্ন্যাস গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আপনি কেবল স্ত্রীর সাথে সঙ্গম করতে পারেন সন্তান উৎপাদনের জন্য, কামনা মেটানোর জন্য নয়। যদি আপনি কামনা মিটানোর জন্য সঙ্গম করেন, তবে আপনি নীচু স্তরে চলে গেলেন। এটা নিন্দনীয়, কিন্তু অনুমোদিত। এর জন্য কর্মের আসক্তির কারণের কর্মের ফল ভোগের জন্য আপনাকে আবার পরের জন্মে জন্মগ্রহণ করতে হবে।
.
এক্ষেত্রে আপনি যখন নীচু স্তরে আছেন, তখন হিন্দুধর্ম এতই সহনশীল যে, আপনাকে সেই স্তর থেকে একবারে উঠে আসতে বলে না। ধীরে ধীরে বিভিন্ন জন্মের মাধ্যমে আপনি আপনার অবস্থার উন্নতি করতে পারবেন। এভাবে আপনি মোক্ষলাভের পথে যাওয়ার সময় নীচু স্তরে পতিতাবৃত্তি, ব্যভিচার, সমকামিতা, অজাচার, পরকিয়াও চালিয়ে যেতে পারেন যতক্ষণ না সেগুলো আপনি শর্তসাপেক্ষে গোপনে করতে সক্ষম হন এবং তা থেকে কোনো জারজ সন্তান জন্ম না নেয়।
.
নীচু স্তরে বস্তুজগতে মানুষের মধ্যে পুরুষ হল শ্রেষ্ঠ আর নারী হল পাপপূর্ণ জন্মের অধিকারী। তাই নারীকে তার স্বামীকে দাসীর ন্যায় দেবতা জ্ঞানে সেবা করতে হবে এবং সে অল্প বুদ্ধির অধিকারী হওয়ায় বিবাহপূর্ব ও পরবর্তীতে সর্বদাই পরাধীন।
.
যত পথভ্রষ্ট মত, সবই হিন্দু দর্শনের পথ!
.
যদি ভালভাবে হিন্দুধর্মীয় মতপথটাকে দেখা হয়, তাহলে কী যে ভয়ঙ্কর জিনিস বেরিয়ে আসবে, তা কল্পনাও করা যায় না! বিকৃত এই মতপথের অনুসারীদের যখন শির্ক, কুফর মুক্ত ইসলামের সরল পথের দিকে আহবান করা হয়, তখন বাপ-দাদার অন্ধ অনুসারী এই সকল ব্যক্তিবর্গের নাফসের-পূজারি-মস্তিষ্কে সত্যের অনুভূতির ন্যূনতম পরশটুকুও যেন লাগতে চায় না!
.
ٱلَّذِينَ يَسْتَحِبُّونَ ٱلْحَيَوٰةَ ٱلدُّنْيَا عَلَى ٱلْءَاخِرَةِ وَيَصُدُّونَ عَن سَبِيلِ ٱللَّهِ وَيَبْغُونَهَا عِوَجًاۚ أُو۟لَٰٓئِكَ فِى ضَلَٰلٍۭ بَعِيدٍ
.
"যারা ইহজীবনকে পরজীবনের উপর প্রাধান্য দেয়, মানুষকে আল্লাহর পথ হতে নিবৃত্ত করে এবং তাতে বক্রতা অনুসন্ধান করে; তারাই তো ঘোর বিভ্রান্তিতে রয়েছে।"
(মহাগ্রন্থ আল-কোরআন, ১৪:৩)

Comments

Popular posts from this blog

মানহাজ ও মাযাহাব নিয়ে যত দ্বন্দ্বের জবাব....

[Special thanks to brother Mainuddin Ahmad for providing some important reference] . মানহাজ অর্থ পথ (path) অথবা পদ্ধতিগত বা নিয়মগত বা প্রণালিগত বিদ্যা (Methodology)। মানহাজ বললে তাই তাকে দুই ভাবে ভাবা হয় - ১) সহিহ মানহাজ, ২) ভ্রান্ত বা বাতিল মানহাজ। . সহিহ মানহা...

কৃষ্ণ কি আল্লাহর নবী ছিল?

এই প্রশ্নটা আমাকেও করা হয়েছে সম্ভবত কয়েকবার। কিন্তু প্রশ্নের উত্তরটা বড়ই জটিল। কারণ এর কোনো যথাযথ উত্তর আমাদের জানা নেই। যদি কৃষ্ণের গোপীদের সাথে লীলার কাজকে সত্য বলে...

ভগবতগীতার বর্ণভেদ নিয়ে ভক্তদের ভণ্ডামির জবাব

============================ চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ৷ তস্য কর্তারমপি মাং বিদ্ধ্যকর্তারমব্যয়ম্৷৷১৩ অর্থ:  "প্রকৃতির তিনটি গুণ এবং কর্ম অনুসারে আমি মনুষ্য সমাজে চারটি বর্ণ...