Skip to main content

আল্লাহ তাআলার বিরুদ্ধে কেন বলা যাবে না? আর কেন আল্লাহ তাআলার বিরুদ্ধে গেলে আল্লাহ রেগে যান? এর অর্থ কি আল্লাহ সৃষ্টির মুখাপেক্ষী নন?


ধরুন, একজন ডাক্তার ফ্রিতে চিকিৎসা করাচ্ছেন। তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ডাক্তার। এখন তার কাছে এক রোগী গেল চিকিৎসা করাতে। তার ভয়ানক অসুখ করেছে। মরার মত অবস্থা। এখন ডাক্তার বলল যে, আপনাকে এই প্রেসক্রিপশন লিখে দিচ্ছি। এই অনুযায়ী ওষুধ খেলে আর নিয়ম মেনে চললে আপনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবেন। এখন রোগী একদিনও ঠিকমত ওষুধ না খেয়ে মদ, গাঁজা খাওয়া শুরু করল! এখন রোগী এই কাজের কারণে সে মারা গেল! এখানে রোগী বেশি বুঝে ফেলেছে ডাক্তারের চেয়ে! তার মদ, গাঁজা ভাল লেগেছে, তাই খেয়েছে! কিন্তু ডাক্তার তার থেকে অধিক বিজ্ঞ আর তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ডাক্তার। তাই তার কথা রোগীর বেশি বোঝার থেকে অবশ্যই বেশি গুরুত্ব রাখে।
একইভাবে এই সকল ইসলামবিদ্বেষী নিজেদের সীমিত বিচারবুদ্ধি দিয়ে সেই সৃষ্টিকর্তাকে বিচার করতে চাইছে যিনি এদেরই বিচারবুদ্ধি সৃষ্টি করেছেন। এখন সমগ্র সৃষ্টির স্রষ্টা ডাক্তারের থেকে বহু উর্ধ্বে! সেক্ষেত্রে তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন, তার অমান্যের অর্থ হল নিজের প্রতি জুলুম করা। যেমনভাবে রোগী নেশা করাকে ভাল মনে করছিল আর নিজের ওপর অত্যাচারের মাধ্যমে নিজেরই সর্বনাশ সে ডেকে আনে, একইভাবে মহান স্রষ্টার বিরুদ্ধাচরণ করে হয়ত এই বিরোধীদের খুব মজা লাগতে পারে, কিন্তু প্রকৃতিতে কল্যাণ অকল্যাণের বিধান নির্দিষ্ট করে দেওয়া স্রষ্টার বিধানের বিরুদ্ধাচারণ করে হারাম পথের অকল্যাণের পথ বেছে নেওয়ার অর্থ হল নিজেরই চূড়ান্ত ক্ষতি সাধন করা। রোগী প্রথমে নেশায় মজা পেয়েছিল, কিন্তু মজা ছিল ক্ষণিকের, তেমনি এই ইসলামবিদ্বেষীদের সমালোচনার মজাও ক্ষণিকের! যেহেতু চূড়ান্ত বিধানের তারা বিরুদ্ধাচারণ করছে, তাই নিজেদের প্রকৃতির ওপর নিজেদের এই অত্যাচারের দরুণ তাদের এর ফল ভোগ করতে হবে।

এখন একজন পিতা তার সন্তানের অন্যায় কাজে সন্তুষ্ট হয় না। মহান প্রতিপালক পিতার থেকেও বহু উর্ধ্বে! সেক্ষেত্রে কীভাবে বান্দার হারাম কাজের মাধ্যমে বান্দার নিজের ওপর জুলুমে রাব্বুল আলামীন সন্তুষ্ট হবেন?

একজন ন্যায়বিচারক যেমন নিজের আবেগ দিয়ে বিচার করে দোষীকে নির্দোষ বলতে পারে না, তেমনি আপন প্রকৃতির ওপর অত্যাচার করা এহেন ইসলামবিদ্বেষীদেরও সঠিক বিচারের জন্য মহান আল্লাহ তাদের হারাম কাজের প্রতিদান হিসেবে শাস্তি প্রদান করতেও যথার্থ ভূমিকা পালন করবেন ইনশাআল্লাহ!

মূলত এসকল ইসলামবিদ্বেষীরা মহান আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তাই মানে না। তারা আল্লাহকে আসলে তাদের চেয়েও নীচু স্তরের জীবের মত কিছু একটা মনে করে! নাউযুবিল্লাহ! আর একারণেই আল্লাহ তাআলার সিদ্ধান্তকেও তারা মেনে নিতে পারে না! আর একারণেই তারা এসকল অনর্থক প্রশ্ন করে থাকে।

এককথায় চূড়ান্ত বিধানের মালিক আল্লাহ এবং এই বিধান পূর্ব থেকে নির্দিষ্ট। স্রষ্টার অধীন সৃষ্টি তার প্রভুর হুকুমের বিরুদ্ধে গিয়ে রাজত্ব করার অর্থ হল স্রষ্টা সেক্ষেত্রে সৃষ্টির থেকে নিম্নতর। কিন্তু স্রষ্টা সমগ্র সৃষ্টির নিয়ন্ত্রক আর সকলের বিচার বিবেচনার ক্ষমতাও তাঁর প্রদানকৃত। সেক্ষেত্রে সৃষ্টি, স্রষ্টার অধীন হওয়ায় স্রষ্টার বিরুদ্ধচারণের অর্থ হল স্রষ্টার নির্দিষ্ট করা প্রকৃতির ওপর সৃষ্টির নিজেরই অত্যাচার সাধন। আর এই অত্যাচারের ফল প্রদানের জন্য স্রষ্টার শাস্তি প্রদান মুখাপেক্ষিতা নয়, বরং তাঁর ন্যায়বিচারেরই প্রকাশস্বরূপ।

আল্লাহই ভাল জানেন।

مَّنِ ٱهْتَدَىٰ فَإِنَّمَا يَهْتَدِى لِنَفْسِهِۦۖ وَمَن ضَلَّ فَإِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَاۚ وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰۗ وَمَا كُنَّا مُعَذِّبِينَ حَتَّىٰ نَبْعَثَ رَسُولًا

"যে কেউ সৎপথে চলে, তারা নিজের মঙ্গলের জন্যেই সৎ পথে চলে। আর যে পথভ্রষ্ট হয়, তারা নিজের অমঙ্গলের জন্যেই পথ ভ্রষ্ট হয়। কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কোন রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।"
(আল-কোরআন, ১৭:১৫)
.
.
.
- আহমাদ আল-উবায়দুল্লাহ

Comments

Popular posts from this blog

মানহাজ ও মাযাহাব নিয়ে যত দ্বন্দ্বের জবাব....

[Special thanks to brother Mainuddin Ahmad for providing some important reference] . মানহাজ অর্থ পথ (path) অথবা পদ্ধতিগত বা নিয়মগত বা প্রণালিগত বিদ্যা (Methodology)। মানহাজ বললে তাই তাকে দুই ভাবে ভাবা হয় - ১) সহিহ মানহাজ, ২) ভ্রান্ত বা বাতিল মানহাজ। . সহিহ মানহা...

কৃষ্ণ কি আল্লাহর নবী ছিল?

এই প্রশ্নটা আমাকেও করা হয়েছে সম্ভবত কয়েকবার। কিন্তু প্রশ্নের উত্তরটা বড়ই জটিল। কারণ এর কোনো যথাযথ উত্তর আমাদের জানা নেই। যদি কৃষ্ণের গোপীদের সাথে লীলার কাজকে সত্য বলে...

Permission of Adultery and Fornication in Hinduism - Remaining Part

Read the previous part here: http:// uniqueislamblog.blogspot.com /2017/11/ permission-of-adultery-and-fornication.html ?m=1 => Condemning physical relationship outside marriage: Generally physical relationship outside marriage is condemned in Hindu Philosophy. Bhagabat Gita says, "There are three gates leading to this hell-**lust**, anger, and greed. Every sane man should give these up, for they lead to the degradation of the soul." (Bhagabat Gita, 16:21) ['Bhagabat Gita As It Is' by His Divine Grace A.C. Bhaktivedanta Swami Prabhupada] This verse indicates that lust or desire outside marriage can lead one to hell if it is not maintained properly. It is further mentioned in Yajur Veda, "O God, **cast aside a lover**, **who cohabits with another's wife** ; **a paramour having illicit connection with a domestic woman** ; **an unmarried elder brother suffering from the pangs of passion** ; younger brother who has married before his elder to ...