এখানে আমাদের একটা বিষয় বুঝতে হবে। ব্যাখ্যা দুই ভাবে হতে পারে, ইসলামিক ব্যাখ্যা, আর ইসলামবিদ্বেষী ব্যাখ্যা। আপনি ইসলামবিদ্বেষীদের যতই ইসলামিক ব্যাখ্যা শুনান না কেন, তারা সেগুলো কানেই তুলবে না, বরং উল্টে অভিযোগের পর অভিযোগ, ভুলের পর ভুল দেখাতেই থাকবে। আর সরল মুসলিমরা তখন ভেবে বসে যে, ইসলামবিদ্বেষীর এত কনফিডেন্স, তা আমার এত কম কনফিডেন্স কেন? আমিও সব ভুল প্রমাণ করে দেখিয়ে দেব। আর তারপর তাদের কোন ব্যাখ্যা শুনে সেটার উত্তর তখন সাথে সাথে খুঁজে না পেলে তার মনে ইসলামবিদ্বেষীদের দেওয়া অপবাদগুলো ঘুরতে থাকে আর তখন সে নাস্তিকতায় ভুগতে শুরু করে।
.
এখানে প্রথমেই সে যে ভুলটা করেছে সেটা হল ইসলামবিদ্বেষীদের দৃষ্টিভঙ্গিকে গুরুত্ব দেওয়া।
.
তারা নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে হত্যাকারী, ধর্ষক, নৃশংস ছাড়া আর কিছুই ভাবতে পারে না! (নাউযুবিল্লাহ) এখন তারা ভাবছে বলে আমাদেরও তাই ভাবতে হবে কেন? কোনো হাদিস বা কোরআন এর আয়াতের কোনো বর্ণনা বা হুকুম দেখে তারা হয়ত ভাবছে যে, এটা এমন কেন! আর আপনি ধরেই নিচ্ছেন যে, তারা খুব যুক্তিপূর্ণ আর তাদের যুক্তি দেখাতে হবে তাদের ভুল প্রমাণের জন্য।
.
আমার কথা হল, যুক্তি পরে হবে ভাই। আগে এটা দেখুন যে, সে সেই হাদিস বা কোরআন এর হুকুমটাকে মানতেই পারনি। আর তাই সেটা তার কাছে ভাল লাগে নি। এখন সে আপনাকে শেখাতে এসেছে যে সেটা ভাল না। এখন আপনি কি তার পোষা তোতাপাখি যে সে যেটাকে ভাল বলবে সেটা ভাল বলে আর যেটাকে খারাপ বলবে, সেটাকে খারাপ বলে গিলে নেবেন? আমরা কেউ ভাল মন্দ নির্ধারণের মালিক নই। এক সময় সমকামিতাকে আমেরিকায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলা হত, আর সমকামিদের মানসিক বিকারগ্রস্থও বলা হত। এখন যারা সমকামিদের বিরুদ্ধে বলে, তাদেরই উল্টে মানসিক বিকারগ্রস্থ বলা হচ্ছে! তাহলে ভাল মন্দের স্ট্যান্ডার্ড চূড়ান্ত না, এটা ক্রমশ পরিবর্তনশীল! তাই ভাল মন্দ বলে আদতে কিছু নেই। আপনি যেটা বলতে পারেন সেটা হল আপনার কাছে কোনো জিনিস ভাল লাগছে, আপনার কাছে কোনো জিনিস খারাপ লাগছে।
হালাল হারাম নির্ধারণের আমরা কে? আমরা তো কেউ নই। এর মালিক হলেন একমাত্র আল্লাহ। যেটা আল্লাহ সঠিক বলেছেন, সেটাই সঠিক। যেটা আল্লাহ ভুল বলেছেন, সেটা ভুল। আর এটাই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি। কারও এতে ভাল লাগুক, কি মন্দ লাগুক সেটা তো আপনার দেখার বিষয় নয়!
.
এখন ইসলামবিদ্বেষীর কাছে ইসলামের একটা জিনিস খারাপ লাগছে আর সে তার দৃষ্টিভঙ্গিতে সেই বিষয়ের বর্ণনা দিচ্ছে। শুধু বর্ণনা দিয়েই থামছে না, তার সাথে মিথ্যাচারও করছে। তাহলে আপনার প্রথম কাজ হল তার দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ না করা। আপনি কেন তার দৃষ্টিভঙ্গিতে ভাববেন? সে কি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে না করবে?
.
মূল কাজ হল দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা, আপনি ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করবেন নাকি ইসলামবিদ্বেষী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করবেন! তাই যদি ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেন, তাহলে ইসলামবিদ্বেষী দৃষ্টিভঙ্গিতে আপনার কী যায় আসে বাপু???
.
إِنَّ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ سَوَآءٌ عَلَيْهِمْ ءَأَنذَرْتَهُمْ أَمْ لَمْ تُنذِرْهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ
"নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, তুমি তাদেরকে সতর্ক কর কিংবা না কর, উভয়ই তাদের জন্য বরাবর, তারা ঈমান আনবে না।"
(আল-কোরআন, ২:৬)
.
.
- Ahmad Ali
Comments
Post a Comment