Skip to main content

হিন্দু মনুসংহিতা অনুযায়ী হিন্দু বাদে বাকি সবাই নিকৃষ্ট!!!


মনুসংহিতার দশম অধ্যায়ের ৪৫ অনুচ্ছেদ বলছে,

"(ব্রহ্মের) মুখ থেকে উৎপন্ন (অর্থাৎ ব্রাহ্মণ), বাহু থেকে উৎপন্ন (অর্থাৎ ক্ষত্রিয়), উরু থেকে উৎপন্ন (অর্থাৎ বৈশ্য) এবং পায়ের পাতা থেকে উৎপন্ন (অর্থাৎ শূদ্র) গোষ্ঠীর বাইরে পৃথিবীতে যেসকল গোষ্ঠী আছে, তাদেরকে বলা হয় "দস্যু", যদিও তারা ম্লেচ্ছদের ভাষা বলুক, অথবা আর্যদের ভাষা বলুক।"
.
"All those tribes in this world, which are excluded from (the community of) those born from the mouth, the arms, the thighs, and the feet (of Brahman), are called Dasyus, whether they speak the language of the Mlekkhas (barbarians) or that of the Aryans."
.
[Manu Samhita, 10:45; translated by George Bühler/source - http://www.sacred-texts.com/hin/manu/manu10.htm]

এখানে তাই মুসলিম, খ্রিস্টান, ইহুদি, নাস্তিক এরা সবাই হল হিন্দুধর্মের দৃষ্টিতে দস্যু, ম্লেচ্ছে, বর্বর। আর তাই হিন্দুধর্মের দৃষ্টিতে মুসলিমরা এত নীচ, ছোট বলে প্রতীয়মান হয়!!!

ইসলাম এরূপে মানুষকে বিবেচনা করে না। মনুসংহিতার দৃষ্টিতে যেখানে হিন্দু বাদে বাকি সবাই দস্যু, ম্লেচ্ছ, বর্বর, যবন, সেখানে কোরআন বলছে, মানুষের মধ্যে কোনো জাত, বর্ণ এর ভেদাভেদ নেই।

يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَٰكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَىٰ وَجَعَلْنَٰكُمْ شُعُوبًا وَقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوٓا۟ۚ إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِندَ ٱللَّهِ أَتْقَىٰكُمْۚ إِنَّ ٱللَّهَ عَلِيمٌ خَبِيرٌ

"হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার (এজন্য নয় যে, তোমরা একে অপরকে ঘৃণা করবে)। তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদা সম্পন্ন যে অধিক মুত্তাকী (আল্লাহভীরু, ন্যায়পরায়ণ, ধার্মিক প্রভৃতি)। আল্লাহ সব কিছু জানেন, সব কিছুর খবর রাখেন।" (আল-কোরআন, ৪৯:১৩)

তবে ইসলামের দৃষ্টিতে বাকি যেসকল ধর্ম আছে, তা সব মানুষ বানিয়েছে। আপনি "হিন্দু" নামটি ধর্মগ্রন্থের কোথাও পাবেন না।

কোরআন বলছে সৃষ্টির শুরু থেকে একটাই ধর্ম সৃষ্টিজগতের জন্য নির্দিষ্ট, আর তা হল এক সত্য সৃষ্টিকর্তার প্রতি নিজের ইচ্ছাশক্তিকে সমর্থন করা, যার আরবি অনুবাদ হল "ইসলাম"। কোরআন বলছে,

إِنَّ ٱلدِّينَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلْإِسْلَٰمُۗ وَمَا ٱخْتَلَفَ ٱلَّذِينَ أُوتُوا۟ ٱلْكِتَٰبَ إِلَّا مِنۢ بَعْدِ مَا جَآءَهُمُ ٱلْعِلْمُ بَغْيًۢا بَيْنَهُمْۗ وَمَن يَكْفُرْ بِـَٔايَٰتِ ٱللَّهِ فَإِنَّ ٱللَّهَ سَرِيعُ ٱلْحِسَابِ

"নিশ্চয় আল্লাহর নিকট একমাত্র দ্বীন হল ইসলাম (আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ)। বস্তুতঃ যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছিল তারা জ্ঞান লাভের পর একে অন্যের উপর প্রাধান্য লাভের জন্য মতভেদ সৃষ্টি করেছে এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর নিদর্শনসমূহ্কে অস্বীকার করবে, (সে জেনে নিক) নিশ্চয়ই আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অতিশয় তৎপর।"
(আল-কোরআন, ৩:১৯)

কারও নাম জাকির, মুহাম্মাদ, আব্দুল্লাহ হতে হল আর সে আল্লাহর নিকট নিজেকে সমর্পণ করল না, তখন সে প্রকৃত অর্থে মুসলিম নয়। তাই যে কোনো ব্যক্তি, সে যে পরিবারেই জন্মাক না কেন, ইতিহাসের যে সময়ই জন্মাক না কেন, যদি নিজের ইচ্ছাশক্তিকে এক সত্য সৃষ্টিকর্তার নিকট আত্মসমর্পণ করে, তাকে তখন মুসলিম বলা হবে।
.
.
- আহমেদ আলি

Comments

Popular posts from this blog

মানহাজ ও মাযাহাব নিয়ে যত দ্বন্দ্বের জবাব....

[Special thanks to brother Mainuddin Ahmad for providing some important reference] . মানহাজ অর্থ পথ (path) অথবা পদ্ধতিগত বা নিয়মগত বা প্রণালিগত বিদ্যা (Methodology)। মানহাজ বললে তাই তাকে দুই ভাবে ভাবা হয় - ১) সহিহ মানহাজ, ২) ভ্রান্ত বা বাতিল মানহাজ। . সহিহ মানহা...

কৃষ্ণ কি আল্লাহর নবী ছিল?

এই প্রশ্নটা আমাকেও করা হয়েছে সম্ভবত কয়েকবার। কিন্তু প্রশ্নের উত্তরটা বড়ই জটিল। কারণ এর কোনো যথাযথ উত্তর আমাদের জানা নেই। যদি কৃষ্ণের গোপীদের সাথে লীলার কাজকে সত্য বলে...

ভগবতগীতার বর্ণভেদ নিয়ে ভক্তদের ভণ্ডামির জবাব

============================ চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ৷ তস্য কর্তারমপি মাং বিদ্ধ্যকর্তারমব্যয়ম্৷৷১৩ অর্থ:  "প্রকৃতির তিনটি গুণ এবং কর্ম অনুসারে আমি মনুষ্য সমাজে চারটি বর্ণ...