Skip to main content

সব কিছু জোড়ায় জোড়ায় বললে সব সময় যৌনতার প্রসঙ্গই কেন নিতে হবে???


এক ভাই মেসেজে প্রশ্ন করেছেন:
.
"এক নাস্তিক আমাকে প্রশ্ন করেছিলো, কুরআন নাকি অবৈজ্ঞানিক,
আল্লাহ পৃথিবীতে সৃষ্ট সকল কিছু তৈরি করেছেন জোড়ায় জোড়ায় (নর ও নারী)
"আমি প্রত্যেক বস্তু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি, যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর"
(কুরআন ৫১ঃ৪৯)
.
তারপর আমি তাকে এটা দিলাম
তাফসিরে আহসানুল বায়ান
.
[1] অর্থাৎ, প্রতিটি জিনিস জোড়া জোড়া, নর ও নারী করেছি। অথবা ঐ জিনিসের বিপরীত জিনিসও সৃষ্টি করেছি। যেমন, আলো ও আঁধার, জল ও স্থল, চন্দ্র ও সূর্য, মিষ্ট ও তিক্ত, দিন ও রাত, ভালো ও মন্দ, জীবন ও মৃত্যু, ঈমান ও কুফরী, সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্য, জান্নাত ও জাহান্নাম, মানব ও দানব ইত্যাদি। এমন কি জীবের বিপরীত জড়পদার্থও এই জন্য জরুরী যে, যাতে দুনিয়ারও জোড়া হয়। অর্থাৎ, দুনিয়ার মোকাবেলায় দ্বিতীয় জীবন আখেরাত।
.
তখন সে বললো আমি এতে একমত নই কারণ,
বিঃদ্রঃ পড়ুন অযৌন প্রজনন, অ্যামিবা, প্যারামিসিয়াম, ইস্ট, হাইড্রা, ওইডিয়া, কনিডিয়া, চলরেণু , স্পোরাঞ্জিওস্পোর, ক্ল্যামাইডোস্পোর, Chaetognatha, ponges, snails, slug-like sea hare ইত্যাদি"
.
.
আমার জবাব:
.
সত্যিই কী আর বলব! এসব নাস্তিকগুলোর খেয়ে দেয়ে আর মনে হয় কোনো কাজ নেই!
.
প্রথমত, জোড়া মানে এই না যে, সমাজে আমাদের চোখের সামনেই সেই জোড়া ঘুরে বেড়াবে। জোড়া প্রকৃতিতে থাকলেই হল সেটা যেভাবে থাকুক।
.
অযৌন জননের ক্ষেত্রে পুং গ্যামেট ও স্ত্রী গ্যামেট এর মিলন হচ্ছে না বলে তাকে আমরা অযৌন বলছি। কিন্তু "জোড়া" মানে শুধু যৌন বিষয়ই কেন হতে যাবে?
অযৌন জননেও জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল আদান প্রদান হচ্ছে, সেক্ষেত্রে অযৌন জননে অংশগ্রহণকারী দুটি জীবের মধ্যে একটাকে ধরা হচ্ছে donar, যে এই genetic material প্রদান করছে, আরেকটা হচ্ছে receiver যেটি genetic material গ্রহণ করছে। এটা একেবারে যৌন জননের মত নয়, কিন্তু অনেকটা যৌন জননের মতই মনে হয়।
.
উইকিপিডিয়া বলছে,
.
"While all prokaryotes reproduce without the formation and fusion of gametes, mechanisms for lateral gene transfer such asconjugation, transformation and transduction ***can be likened to sexual reproduction*** in the sense of genetic recombination in meiosis."
.
[Narra, H. P.; Ochman, H. (2006). "Of what use is sex to bacteria?". Current Biology. 16(17): R705–710.doi:10.1016/j.cub.2006.08.024.PMID 16950097.,
Source - https://en.m.wikipedia.org/wiki/Asexual_reproduction]
.
এখানে তাই জোড়া বিষয়টি অযৌন জননের ক্ষেত্রে কাজ করছে।
.
পার্থেনোজেনেসিস এর ক্ষেত্রেও এই জোড়া দেখা যায় অন্যভাবে। পার্থেনোজেনেসিস বা অপুংজনি জননে যে মাতৃজীব থেকে অপত্য জীব তৈরি হয়, সেই অপত্য জীব পুরুষও হতে পারে, স্ত্রীও হতে পারে। তাহলে জনন প্রক্রিয়ার সাথে জোড়া বিষয়টি বাদ হয়ে যাচ্ছে না। উইকিপিডিয়ায় এভাবে মন্তব্য করা হচ্ছে,
.
"The production of female offspring by parthenogenesis is referred to as thelytoky(e.g., aphids) while the production of males by parthenogenesis is referred to as arrhenotoky(e.g., bees). When unfertilized eggs develop into both males and females, the phenomenon is called deuterotoky."
.
[Gavrilov, I.A.; Kuznetsova, V.G. (2007)."On some terms used in the cytogenetics and reproductive biology of scale insects (Homoptera: Coccinea)" (PDF).Comparative Cytogenetics. 1 (2): 169–174.ISSN 1993-078X,
Source - https://en.m.wikipedia.org/wiki/Parthenogenesis]
.
যদি এই সবকিছুও বাদ দিই, তাহলেও জোড়া এর ব্যাপারটা আমরা অন্যভাবে দেখতে পাই। সেক্ষেত্রে আগেই বলেছি যে, জোড়া বলতে শুধু যে যৌনতার ব্যাপারটি জড়িত হবে, এমন কোনো মানে নেই।
.
সেক্ষেত্রে আমরা যদি ভাল করে দেখি, তবে DNA, ক্রোমোজোম এর সজ্জায় জোড়া বা pair আছে। জীবের শরীরে অ্যামিনো এ্যাসিড এর ক্ষেত্রেও জোড়ার ব্যাপারটা আছে। সেক্ষেত্রে আমাদের শরীরের অ্যামিনো এ্যাসিডে left handed isomer এবং right handed isomer এর ক্রিয়া দেখা যায়। মৃত্যুর পর জীবদেহের ধ্বংসাবশেষে এই দুই আইসোমারের সমান পরিমাণের উপস্থিতি তৈরি হয়। এগুলো যৌন অযৌন দেখে হয় না, সব জীবেরই হয়ে থাকে। তার ওপর জৈব অণুর মধ্যেও পরমাণু আছে, পরমাণু থাকলে ইলেকট্রন ও প্রোটন আছে। আর ইলেকট্রন ও প্রোটন বিপরীত প্রকৃতির দুই জোড়া। এই বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এক দ্বীনি ভাই যার লেখাগুলো এই ওয়েবসাইট থেকে পড়তে পারেন -
.
১) http://www.elnaggarzr.com/en/main.php?id=38&Shift=0
.
২) http://www.elnaggarzr.com/en/main.php?id=38&Shift=1
.
এছাড়া অ্যামিবা আরও বিভিন্ন জীবের ক্ষেত্রে তাদের দেহাংশের বিভাজন ঘটে। এক্ষেত্রে এক দেহ বিভাজিত হয়ে দুই ভাগ তৈরি হয়। সেই দুই ভাগ হতে অপর দুই ভাগ তৈরি হয়। যদি অনেকগুলো ভাগও তৈরি হয়, সেক্ষেত্রে এই ভাগ থেকে পুনরায় বিভাজনও সম্ভব। তাহলে এখানেও জোড়া এর অস্তিত্ব আছে।
.
এত জোড়া থাকা সত্ত্বেও এই সব নাস্তিকেরা অযুহাত দিয়ে যাচ্ছে কেবল একটাই কারণে যে, তারা কোরআনকে আল্লাহর বাণী বলে হজম করতে পারে না।
.
এসব নাস্তিকরা সত্য দেখেও দেখে না, শুনেও শোনে না। এদের অন্তর সত্য হতে বিমুখ হয়ে গেছে।
.
وَمَثَلُ ٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ كَمَثَلِ ٱلَّذِى يَنْعِقُ بِمَا لَا يَسْمَعُ إِلَّا دُعَآءً وَنِدَآءًۚ صُمٌّۢ بُكْمٌ عُمْىٌ فَهُمْ لَا يَعْقِلُونَ
.
"বস্তুতঃ এহেন কাফেরদের উদাহরণ এমন, যেন কেউ এমন কোন জীবকে আহবান করছে যা কোন কিছুই শোনে না, হাঁক-ডাক আর চিৎকার ছাড়া বধির মূক এবং অন্ধ। সুতরাং তারা কিছুই বোঝে না।"
(আল-কোরআন, ২:১৭১)
.
.
- Ahmed Ali

Comments

Popular posts from this blog

মানহাজ ও মাযাহাব নিয়ে যত দ্বন্দ্বের জবাব....

[Special thanks to brother Mainuddin Ahmad for providing some important reference] . মানহাজ অর্থ পথ (path) অথবা পদ্ধতিগত বা নিয়মগত বা প্রণালিগত বিদ্যা (Methodology)। মানহাজ বললে তাই তাকে দুই ভাবে ভাবা হয় - ১) সহিহ মানহাজ, ২) ভ্রান্ত বা বাতিল মানহাজ। . সহিহ মানহা...

কৃষ্ণ কি আল্লাহর নবী ছিল?

এই প্রশ্নটা আমাকেও করা হয়েছে সম্ভবত কয়েকবার। কিন্তু প্রশ্নের উত্তরটা বড়ই জটিল। কারণ এর কোনো যথাযথ উত্তর আমাদের জানা নেই। যদি কৃষ্ণের গোপীদের সাথে লীলার কাজকে সত্য বলে...

ভগবতগীতার বর্ণভেদ নিয়ে ভক্তদের ভণ্ডামির জবাব

============================ চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ৷ তস্য কর্তারমপি মাং বিদ্ধ্যকর্তারমব্যয়ম্৷৷১৩ অর্থ:  "প্রকৃতির তিনটি গুণ এবং কর্ম অনুসারে আমি মনুষ্য সমাজে চারটি বর্ণ...