সৃষ্টিজগতের স্রষ্টা থাকলে স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করেছেন - এটাই তো প্রশ্ন? এর অর্থ আপনি মেনে নিচ্ছেন তাহলে যে, সৃষ্টিজগতের স্রষ্টা আছে।
.
এখন বলি, সৃষ্টি এবং স্রষ্টার প্রকৃতি একই রকম হওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। যেমন ধরুন আমি বললাম যে, আপনি একটা বই লিখলেন। সেই বইয়ের লেখাগুলো আপনার সৃষ্টি, কিন্তু আপনি কি লেখাগুলোর মধ্যে আছেন? না। এখানে বইয়ের মধ্যে যা আছে, তা দিয়ে আপনাকে মাপা যাবে না। একইভাবে সৃষ্টি যেমন প্রকৃতির, সেই প্রকৃতি থেকে স্রষ্টাকেও মাপা যুক্তিযুক্ত নয়, কারণ স্রষ্টার প্রকৃতি অবশ্যই সৃষ্টি থেকে পৃথক হতে হবে। যদি সৃষ্টি স্থান, সময়ে আবদ্ধ হয়, স্রষ্টাকে স্থান, সময়ের উর্ধ্বে হতে হবে। যদি সৃষ্টির শুরু ও শেষ থাকে, স্রষ্টার কোনো শুরু ও শেষ থাকা যুক্তিযুক্ত নয়। তাই যদি স্রষ্টাকে কেউ সৃষ্টি করে, তাহলে স্রষ্টা আসলে স্রষ্টা নয়, স্রষ্টা আসলে সৃষ্টির অংশ। তাই প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা সৃষ্ট হতে পারেন না। এটা তাঁর বৈশিষ্ট্যের বিরুদ্ধে যায় যা অযৌক্তিক।
.
এছাড়াও যদি স্রষ্টাকে কেউ যদি সৃষ্টি করে থাকে, তাহলে সেটা হবে প্রথম সৃষ্টিকর্তা যে স্রষ্টাকে সৃষ্টি করেছে। তখন প্রথম সৃষ্টিকর্তার জন্য থাকবে একজন দ্বিতীয় সৃষ্টিকর্তা। এভাবে তৃতীয় সৃষ্টিকর্তা, চতুর্থ সৃষ্টিকর্তা এবং এভাবে চলতেই থাকবে এবং শেষ হবে না। তখন সৃষ্টি অযৌক্তিক হয়ে যাবে। তাই সৃষ্টিকে যৌক্তিক হতে হলে একজন স্রষ্টাতেই থামতে হবে যাঁর প্রকৃতি সৃষ্টির আপেক্ষিকতায় আবদ্ধ নয়।
.
তাই স্রষ্টার সৃষ্টিকর্তা থাকলে স্রষ্টার বৈশিষ্ট্য যেমন অযৌক্তিক হয়ে পড়ে, তেমনি সৃষ্টিও অযৌক্তিক হয়ে পড়ে। অর্থাৎ প্রকৃত যুক্তিযুক্ত সারমর্ম হল, স্রষ্টার সৃষ্টিকর্তা কে - এই প্রশ্নটিই অযৌক্তিক!!!
.
فَاطِرُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۚ جَعَلَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَٰجًا وَمِنَ ٱلْأَنْعَٰمِ أَزْوَٰجًاۖ يَذْرَؤُكُمْ فِيهِۚ لَيْسَ كَمِثْلِهِۦ شَىْءٌۖ وَهُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْبَصِيرُ
.
"তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের স্রষ্টা। তিনি তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্যে যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং চতুস্পদ জন্তুদের মধ্য থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন। এভাবে তিনি তোমাদের বংশ বিস্তার করেন। কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়। তিনি সব শুনেন, সব দেখেন।"
(মহাগ্রন্থ আল-কোরআন, ৪২:১১)
[Special thanks to brother Mainuddin Ahmad for providing some important reference] . মানহাজ অর্থ পথ (path) অথবা পদ্ধতিগত বা নিয়মগত বা প্রণালিগত বিদ্যা (Methodology)। মানহাজ বললে তাই তাকে দুই ভাবে ভাবা হয় - ১) সহিহ মানহাজ, ২) ভ্রান্ত বা বাতিল মানহাজ। . সহিহ মানহা...
Comments
Post a Comment