Skip to main content

রোজার বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি


আমি তো জানি আপনার ধর্মে বিশ্বাস নাই, তাহলে রোজা রাখছেন যে ? ভদ্রলোক যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ভার্জিনিয়া টেক থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন, জব করছেন একটা প্রাইভেট ফার্মের উঁচু পদে । তার সাথেই কথা হচ্ছিল।

-তোমরা যাকে রোজা বল, আমি তাকে বলি ‘অটোফেজি’।রোজার মাসে খাবার দাবারের ঝামেলা, তাই এই মাসটা আমি অটোফেজি করি । -‘অটোফেজি’ , এটা আবার কি ?

-তুমি ‘অটোফেজি’ বোঝ না ? তোমাদের রোজার উপর গবেষণা করে জাপানি গবেষক ইয়োশিনোরি ওহশোমি ২০১৬ সালে ‘অটোফেজি’ আবিষ্কার করে নোবেল নিয়ে নিল ! আর তুমি ‘অটোফেজি’ বোঝ না !

-নড়েচড়ে বসলাম, একটু বুঝিয়ে বলেন তো ?

-অটোফেজি শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ অটো ও ফাজেইন থেকে। বাংলায় এর অর্থ হচ্ছে—আত্ম ভক্ষণ বা নিজেকে খেয়ে ফেলা ।

-কি সাংঘাতিক ! বলেন কি ?

-উপবাসের সময় আমাদের শরীরের সক্রিয় কোষ গুলো চুপচাপ বসে না থেকে সারা বছরে তৈরী হওয়া ক্ষতিকারক আর নিষ্ক্রিয় কোষগুলোকে খেয়ে ফেলে শরীরকে নিরাপদ আর পরিষ্কার করে দেয়। এটাই ‘অটোফেজি’ । ‘অটোফেজি’ আবিষ্কারের পর থেকে স্বাস্হ্য সচেতন পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মের বা ধর্ম মানে না অনেক মানুষ সারা বছরে বিভিন্ন সময়ে ‘অটোফেজি’ করে শরীরটাকে সুস্হ রাখে । জেনে অবাক হবে, ‘অটোফেজি’ তে ক্যান্সারের জীবানুও মারা যায় !

-কিছুটা সময় নিশ্চুপ হয়ে বসে রইলাম । আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতায় মনটা খুব নরম হয়ে গেল ।

-কি হলো চুপ হয়ে গেলে যে ?

-আপনার কি মনে পড়ে আমাকে বলেছিলেন ‘তোমাকে অভুক্ত রেখে তোমার স্রষ্টা খুশি হয় কি করে ‘ ? সেদিনের আপনার এ কথার জবাব আজ পেয়ে গেছি । আমার আল্লাহ তাঁকে খুশী করার কথা বলে রোজার মাধ্যমে ‘অটোফেজি’ করিয়ে আমাকে সুস্হ রাখছেন । ‘অটোফেজি’ আবিষ্কার হলো ২০১৬ তে, তোমরা ‘অটোফেজি’ করছো এখন এটা জেনে । আর মুসলিমরা ‘অটোফেজি’ করে আসছে হাজার বছর ধরে কিছু না জেনে-শুধু বিশ্বাস করে ।

তার রুম থেকে বেরিয়ে এসেছি তখন বিকেল । ব্যস্ত সড়কে শত মানুষের ছুটোছুটি । ইফতারী সাজিয়ে বসে আছে গলির মাথার হোটেলটা । একটা ভ্যানে টুপি ,আতর আর মেসওয়াক বিছিয়ে বসেছে কেউ । আর তাকে ঘিরে আছে কিছু বিশ্বাসী পথিক । আসরের আযান হচ্ছিল ‘হাইয়া আলাল ফালাহ, হাইয়া আলাল ফালাহ’ কল্যাণের দিকে এসো। আসলেই ইসলামে অকল্যাণ কিছু নেই ।।
Collected

আল-কোরআন, ২:১৮৩

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ كُتِبَ عَلَيْكُمُ ٱلصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

"হে বিশ্বাসিগণ! তোমাদের জন্য সিয়ামের (রোযার) বিধান দেওয়া হল, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীগণকে দেওয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা সংযমশীল হতে পার।" [১]

[১] صوم صيام এর (মাসদার/ক্রিয়ামূল)। এর শরীয়তী অর্থ হল, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ফজর উদিত হওয়ার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার এবং যৌনবাসনা পূরণ করা থেকে বিরত থাকা। এই ইবাদতটা যেহেতু আত্মাকে পবিত্র ও শুদ্ধি করণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই তা তোমাদের পূর্বের উম্মতের উপরেও ফরয করা হয়েছিল। এই রোযার সবচেয়ে বড় লক্ষ্য হল তাকওয়া, পরহেযগারী তথা আল্লাহভীরুতা অর্জন। আর আল্লাহভীরুতা মানুষের চরিত্র ও কর্মকে সুন্দর করার জন্য মৌলিক ভূমিকা পালন করে থাকে।

(তাফসিরে আহসানুল বয়ান)

Comments

Popular posts from this blog

মানহাজ ও মাযাহাব নিয়ে যত দ্বন্দ্বের জবাব....

[Special thanks to brother Mainuddin Ahmad for providing some important reference] . মানহাজ অর্থ পথ (path) অথবা পদ্ধতিগত বা নিয়মগত বা প্রণালিগত বিদ্যা (Methodology)। মানহাজ বললে তাই তাকে দুই ভাবে ভাবা হয় - ১) সহিহ মানহাজ, ২) ভ্রান্ত বা বাতিল মানহাজ। . সহিহ মানহা...

কৃষ্ণ কি আল্লাহর নবী ছিল?

এই প্রশ্নটা আমাকেও করা হয়েছে সম্ভবত কয়েকবার। কিন্তু প্রশ্নের উত্তরটা বড়ই জটিল। কারণ এর কোনো যথাযথ উত্তর আমাদের জানা নেই। যদি কৃষ্ণের গোপীদের সাথে লীলার কাজকে সত্য বলে...

ভগবতগীতার বর্ণভেদ নিয়ে ভক্তদের ভণ্ডামির জবাব

============================ চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ৷ তস্য কর্তারমপি মাং বিদ্ধ্যকর্তারমব্যয়ম্৷৷১৩ অর্থ:  "প্রকৃতির তিনটি গুণ এবং কর্ম অনুসারে আমি মনুষ্য সমাজে চারটি বর্ণ...