#Dawah_tool....
মনে করুন, কোনো অমুসলিম কোরআন থেকে আপনার সামনে বেছে বেছে ১০ টা, ১৫ টা, ২০ টা এমনকি হয়ত তারও বেশি আয়াত বের করে দেখালো যে, কোরআন বলছে অমুসলিমদের হত্যা করতে। এখন আপনি কীভাবে এত আয়াতের উত্তর দেবেন?
.
আমার ব্যক্তিগত সাজেশনটা হল, আপনি মাত্র ৩টি আয়াত ব্যবহার করে তাদের অভিযোগের জবাব দিন।
.
♦ ১ম আয়াত:
.
সূরা বাকারা(অধ্যায় ২), আয়াত নং ১৯০:
.
وَقَٰتِلُوا۟ فِى سَبِيلِ ٱللَّهِ ٱلَّذِينَ يُقَٰتِلُونَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوٓا۟ۚ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يُحِبُّ ٱلْمُعْتَدِينَ
.
"তোমরা আল্লাহর পথে সেই লোকেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, কিন্তু সীমা অতিক্রম করো না। আল্লাহ নিশ্চয়ই সীমা অতিক্রমকারীকে ভালবাসেন না।"
.
এই আয়াতের মাধ্যমে এই প্রসঙ্গটি ব্যাখ্যা করুন যে, ইসলামে বিদ্রোহ তখনই প্রযোজ্য যখন মুসলিমদেরকে আক্রমণ করা হয়েছে এবং ফিতনা বিস্তারের মাধ্যমে শান্তি বিনষ্ট করা হয়েছে, কেননা আল্লাহ বলছেন - "তোমরা আল্লাহর পথে সেই লোকেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে"।
কিন্তু বিদ্রোহতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হত্যা করা বা অপ্রয়োজনীয়ভাবে কোনো সম্পদ, গাছপালা, ঘরবাড়ি নষ্ট করার অনুমতি নেই যেহেতু আল্লাহ বলছেন - "কিন্তু সীমা অতিক্রম করো না। আল্লাহ নিশ্চয়ই সীমা অতিক্রমকারীকে ভালবাসেন না"।
.
.
♦ ২য় আয়াত:
.
সূরা তওবা(অধ্যায় ৯), আয়াত ৬:
.
وَإِنْ أَحَدٌ مِّنَ ٱلْمُشْرِكِينَ ٱسْتَجَارَكَ فَأَجِرْهُ حَتَّىٰ يَسْمَعَ كَلَٰمَ ٱللَّهِ ثُمَّ أَبْلِغْهُ مَأْمَنَهُۥۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَعْلَمُونَ
.
"মুশরিকদের কেউ যদি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে তবে তাকে আশ্রয় দাও যাতে সে আল্লাহর বাণী শোনার সুযোগ পায়; তারপর তাকে তার নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দাও। এটা এজন্য করতে হবে যে, এরা এমন এক সম্প্রদায় যারা (ভাল-মন্দ, সত্য-মিথ্যা সম্পর্কে) অজ্ঞ।"
.
এই আয়াতের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করুন যে, নির্বিচারে হত্যা করায় ইসলাম সমর্থন করে না। আর তাইতো কেউ যদি শান্তিকামী হয়ে আশ্রয় প্রার্থনা করে, ইসলাম তখন সেই ব্যক্তিকে কেবল আশ্রয় দেওয়ার কথা বলেই ক্ষান্ত হয় না, বরং এর পাশাপাশি তাকে সঠিক পথনির্দেশনা এবং নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়ার জন্যও উৎসাহ প্রদান করে।
.
.
♦ ৩য় আয়াত:
.
সূরা মায়েদা(অধ্যায় ৫), আয়াত ৩২:
.
مِنْ أَجْلِ ذَٰلِكَ كَتَبْنَا عَلَىٰ بَنِىٓ إِسْرَٰٓءِيلَ أَنَّهُۥ مَن قَتَلَ نَفْسًۢا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِى ٱلْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ ٱلنَّاسَ جَمِيعًا وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَآ أَحْيَا ٱلنَّاسَ جَمِيعًاۚ وَلَقَدْ جَآءَتْهُمْ رُسُلُنَا بِٱلْبَيِّنَٰتِ ثُمَّ إِنَّ كَثِيرًا مِّنْهُم بَعْدَ ذَٰلِكَ فِى ٱلْأَرْضِ لَمُسْرِفُونَ
.
"এ কারণেই বনী ইস্রাঈলের প্রতি এ বিধান দিলাম যে, যে ব্যক্তি নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজ করার দন্ডদান উদ্দেশ্য ছাড়া কাউকে হত্যা করল, সে যেন পৃথিবীর সকল মানুষকেই হত্যা করল। আর কেউ কারো প্রাণরক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সকল মানুষের প্রাণ রক্ষা করল। তাদের নিকট তো আমার রসূলগণ স্পষ্ট প্রমাণ এনেছিল, কিন্তু এর পরও অনেকে পৃথিবীতে সীমালংঘনকারীই রয়ে গেল।"
.
এই আয়াতের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করুন যে, ইসলামে নিরপরাধ ব্যক্তি হোক সে মুসলিম বা অমুসলিম - তাকে হত্যা করা নিষিদ্ধ এবং সেটা পৃথিবীর সকল মানুষকে হত্যার সমতুল্য। এমনকি কোনো শান্তিকামী ও নিরপরাধ ব্যক্তি হোক সে মুসলিম বা অমুসলিম - তাকে রক্ষা করাও পুণ্যের কাজ এবং তা সমস্ত মানুষকে রক্ষা করার সমতুল্য।
.
.
আশা করা যায়, এই তিনটি আয়াতের প্রসঙ্গ সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারলে আপনার সামনে কোরআন থেকে যত হত্যার আয়াতই কেউ দেখাক না কেন, তার যথাযথ জবাব দেওয়া আপনার পক্ষে প্রদান করা সম্ভব হবে ইনশা আল্লাহ।
Comments
Post a Comment