♦ হিন্দুধর্মের দৃষ্টিভঙ্গি:
.
১) ধর্মযুদ্ধের প্রতি অনীহার প্রকাশ:
.
"হে শ্রীকৃষ্ণ লক্ষ্মীপতি মাধব, আত্মীয় স্বজনদের হত্যা করে কী লাভ হবে এবং তা থেকে কেমন করে আমরা সুখী হব!"
(ভগবতগীতা, ০১:৩৭)
.
.
২) ধর্মযুদ্ধের প্রতি অনীহা নিন্দনীয়:
.
"ভগবান বললেন - প্রিয় অর্জুন, এই ঘোর সংঙ্কটময় যুদ্ধস্থলে যারা প্রকৃত জীবনের মূল্য বোঝেনা সেসব অনার্যের মত শোকানল তোমার হৃদয়ে কীভাবে প্রজ্জলিত হল? এই রকমের মনোভাব তোমাকে স্বর্গলোকে উন্নীত করবে না। পক্ষান্তরে তোমার সমস্ত যশরাশি বিনষ্ট হবে।
হে পার্থ, এই অসন্মানজনক ক্লীবত্তের বশবর্তী হয়ো না, এই ধরনের আচরণ তোমার পক্ষে অনুচিত। হে পরন্তপ, হৃদয়ের দুর্বলতা পরিত্যাগ করে উঠে দাড়াও।"
(ভগবতগীতা, ২:২-৩)
.
.
৩) ধর্মযুদ্ধে অংশগ্রহণ ক্ষত্রিয় যোদ্ধার ধর্ম:
.
"ক্ষত্রিয় রূপে তোমার স্বধর্ম বিবেচনা করেও তোমার দ্বিধাগ্রস্থ হওয়া উচিৎ নয়। কারণ ধর্ম রক্ষার্থে যুদ্ধ করা থেকে ক্ষত্রিয়ের পক্ষে মঙ্গলকর আর কিছুই নাই।
হে পার্থ, স্বর্গদ্বার উন্মোচনকারী এই প্রকার ধর্মযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সুযোগ না চাইতেই যে সব ক্ষত্রিয়ের কাছে আসে, তারা সুখী হন।"
(ভগবতগীতা, ২:৩১-৩২)
.
.
৪) ধর্মযুদ্ধে নিহত ব্যক্তির স্বর্গলাভ, জীবিত ব্যক্তির রাজ্যসুখ লাভ:
.
"হে কুন্তীপুত্র, এই যুদ্ধে নিহত হলে তুমি স্বর্গলাভ করবে আর জয়ী হলে রাজ্যসুখ ভোগ করবে অতএব যুদ্ধের জন্য দৃঢ় সংকল্প হয়ে উত্থিত হও।"
(ভগবতগীতা, ২:৩৭)
.
"যদি যুদ্ধে নিহত একজন ক্ষত্রিয় বীরের জন্য কেউ শোকগ্রস্ত না হন, তবে তিনি স্বর্গে গমন করবেন এবং স্বর্গের অধিবাসী হিসেবে মর্যাদা লাভ করবেন.........
শোন আমার কথা - এমনতর ব্যক্তির জন্য কী ধরণের সুখ প্রস্তুত রয়েছে তা আমি গণনা করেছি। ***শীর্ষস্থানীয় অপ্সরা - যাদের সংখ্যা হবে হাজার হাজার - দ্রুত বেগে ছুটে বেরিয়ে আসবে (যুদ্ধে নিহত ক্ষত্রিয় বীর আত্মাকে বরণ করতে) তাদের প্রভুর প্রতি ব্যাকুলভাবে লালায়িত হয়ে..."***
.
(মহাভারত/গ্রন্থ নং ১২: শান্তিপর্ব/খণ্ড ১/রাজধর্মানুশাসন পর্ব/অধ্যায় ৯৮;
অনুবাদ - কিশারি মোহন গাঙ্গুলি;
মূল ইংরেজি অনুবাদের উৎস - source - http://www.sacred-texts.com/hin/m12/m12a097.htm)
.
["A slain hero, if nobody grieves for him, goes to heaven and earns the respect of its denizens.........
Listen to me as I enumerate the felicity that is in store for such a person. Foremost of Apsaras, numbering by thousands, go out with great speed (for receiving the spirit of the slain hero) coveting him for their lord..."
.
(The Mahabharata/Book 12: Santi Parva/Part 1/Rajadharmanusasana Parva/SECTION XCVIII;
translated by Kisari Mohan Ganguli;
source - http://www.sacred-texts.com/hin/m12/m12a097.htm)]
.
"সর্বমোট সাত ধরণের দাস রয়েছে, সেগুলি হল - ***যাকে কোনো একটি মানদণ্ডে বন্দি করা হয়েছে***, যে তার প্রাত্যাহিক খাদ্যের জন্য সেবায় নিয়োজিত, যে কোনো গৃহে জন্মলাভ করেছে, যাকে আদান-প্রদান করা হয়েছে, যাকে পূর্বপুরুষ হতে উত্তরাধিকার সূত্রে লাভ করা হয়েছে এবং ***যাকে শাস্তির মাধ্যমে দাসে পরিণত করা হয়েছে।***
(মনুসংহিতা, ৮:৪১৫)
.
["There are slaves of seven kinds, (viz.) he who is made a captive under a standard, he who serves for his daily food, he who is born in the house, he who is bought and he who is given, he who is inherited from ancestors, and he who is enslaved by way of punishment."
(Laws of Manu, 8:415; translated by George Bühler;
source - http://www.sacred-texts.com/hin/manu/manu08.htm)]
.
.
৫) ধর্মযুদ্ধ থেকে পালানো পাপকার্য:
.
"কিন্তু তুমি যদি এই ধর্মযুদ্ধ না কর তা হলে তোমার স্বীয়কীর্তি থেকে ভ্রষ্ট হয়ে পাপ ভোগ করবে।"
(ভগবতগীতা, ২:৩৩)
.
.
♦ ইসলামিক দৃষ্টিভঙ্গি:
এবার হিন্দুদের দৃষ্টিভঙ্গিই হিন্দুদের ওপর কোরআন দিয়ে প্রয়োগ করা যাক।
.
১) ধর্মযুদ্ধের প্রতি অনীহার প্রকাশ:
.
"...তারা বলেছিলঃ আমরা যুদ্ধ করব না এটা কীরূপে (সম্ভব), অথচ নিজেদের আবাস হতে ও স্বজনদের নিকট হতে আমরা বহিস্কৃত হয়েছি? অনন্তর যখন তাদের উপর যুদ্ধ বিধিবদ্ধ হল তখন তাদের অল্প সংখ্যক ব্যতীত সবাই পশ্চাৎপদ হয়ে পড়ল এবং অত্যাচারীদেরকে আল্লাহ সম্যক রূপে অবগত আছেন।"
(মহাগ্রন্থ আল-কোরআন, ২:২৪৬)
.
.
২) ধর্মযুদ্ধের প্রতি অনীহা নিন্দনীয়:
.
"তোমাদের কী হয়েছে যে, তোমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করছ না? অথচ অসহায় নারী, পুরুষ এবং শিশুদের মধ্যে যারা দুর্বল তারা বলেঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে অত্যাচারী এই নগর হতে নিস্কৃতি দিন এবং স্বীয় সন্নিধান হতে আমাদের পৃষ্ঠপোষক ও নিজের নিকট হতে আমাদের জন্য সাহায্যকারী প্রেরণ করুন।"
(মহাগ্রন্থ আল-কোরআন, ৪:৭৫)
.
.
৩) ধর্মযুদ্ধে অংশগ্রহণ মুজাহিদের ধর্ম:
.
"যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে(ঈমানদার মুজাহিদগণ), তারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে এবং যারা কাফির(সত্য প্রত্যাখানকারী), তারা শয়তানের পক্ষে যুদ্ধ করে; সুতরাং তোমরা শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর; নিশ্চয়ই শয়তানের কৌশল দুর্বল।"
(মহাগ্রন্থ আল-কোরআন, ৪:৭৬)
.
.
৪) জিহাদে নিহত ব্যক্তির জান্নাত লাভ, জীবিত ব্যক্তির গণীমতির মাল লাভ:
.
"আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহর পথের মুজাহিদ, অবশ্য আল্লাহ্ই অধিক জ্ঞাত কে তাঁর পথে জিহাদ করছে, সর্বদা সিয়াম পালনকারী ও সালাত আদায়কারীর মত। আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর পথে জিহাদকারীর জন্য এই দায়িত্ব নিয়েছেন, যদি তাকে মৃত্যু দেন তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন অথবা পুরস্কার বা গানীমতসহ নিরাপদে ফিরিয়ে আনবেন।"
[গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৫৬/ জিহাদ ও যুদ্ধকালীন আচার ব্যবহার (كتاب الجهاد والسير)
হাদিস নম্বরঃ ২৭৮৭
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
source - http://www.hadithbd.com/share.php?hid=26943]
.
.
৫) ধর্মযুদ্ধ থেকে পালানো পাপকার্য:
.
দু’দল পরস্পর সম্মুখীন হওয়ার দিন (উহুদ যুদ্ধে) তোমাদের মধ্যে যারা পলায়নপর হয়েছিল, তোমাদের কোন কোন অতীত কার্যকলাপের জন্য শয়তান তাদের পদস্খলন ঘটিয়েছিল এবং নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করেছেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাপরায়ণ, অতি সহনশীল।
(মহাগ্রন্থ আল-কোরআন, ৩:১৫৫)
.
.
তাহলে উগ্রবাদী হিন্দুদের ভণ্ডামি তাদের ধর্মগ্রন্থ দ্বারাই প্রমানিত!!!
[Special thanks to brother Mainuddin Ahmad for providing some important reference] . মানহাজ অর্থ পথ (path) অথবা পদ্ধতিগত বা নিয়মগত বা প্রণালিগত বিদ্যা (Methodology)। মানহাজ বললে তাই তাকে দুই ভাবে ভাবা হয় - ১) সহিহ মানহাজ, ২) ভ্রান্ত বা বাতিল মানহাজ। . সহিহ মানহা...
Comments
Post a Comment