Skip to main content

হিন্দুদের আমিষ ও নিরামিষ খাদ্যের দ্বিমুখী দৃষ্টিভঙ্গি


পূজায় নিরামিষ খাদ্য মনকে শান্ত করে, অথচ মুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আমিষ খাদ্য মনকে উগ্র করে - এই দাবি কতটুকু গ্রহণযোগ্য?
.
হিন্দু ভাই বোনদের প্রায়ই এই অভিযোগ করতে শোনা যায় যে, আমাদের মুসলিমদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আমরা জীব হত্যা করি আর আমিষ খাবার খাই যা দেহ মনকে নাকি অশান্ত করে তোলে। তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তারা উপোস থাকে আর নিরামিষ খায়, যেটা মনকে শান্ত করে।
.
খাদ্যের অজুহাতে এখানে তারা ইসলামেরই নিন্দা করে।
.
জীবহত্যার কথা যদি হয়, তাহলে পুজোর অঞ্জলি দেওয়ার সময় যদি কোনো মশা আপনাকে কামড়ায়, তাহলে আপনি মশা মারতে পারবেন না, কারণ আপনি তখন জীব হত্যা করছেন। আপনি কোনো চামড়ার তৈরি জুতো পরতে পারেন না আর চামড়া দিয়ে তৈরি কোনো বাদ্যযন্ত্র এর শব্দও শুনতে পারেন না কারণ সেই চামড়া কোনো প্রাণিকে হত্যা করেই পাওয়া গেছে আর আপনি প্রাণি হত্যাকেই সমর্থন করছেন। আপনি কাঠের তৈরি কোনো বসার চেয়ার বা আসনে বসতে পারেন না, কারণ সেই কাঠ গাছ কেটে পাওয়া গেছে আর গাছেরও জীবন আছে আর তাই জীব হত্যা বা জীবকে কষ্ট দেওয়া আপনি সমর্থন করছেন।
.
খোদ হিন্দু মনুসংহিতায় বলা হচ্ছে যে, মাংস খেলে কোনো পাপ হয় না, এটা স্বাভাবিক ব্যাপার, তাহলে আপনাদের ধর্মগ্রন্থ যখন আমিষ খাওয়াকে স্বাভাবিক বলছে, তখন আপনারা আমাদের প্রশ্ন করারই বা কে?
.
"**He who eats meat**, when he honours the gods and manes, **commits no sin**, whether he has bought it, or himself has killed (the animal), or has received it as a present from others."
.
(The Laws of Manu, translated by George Bühler, Chapter 5, Verse 32,
source - http://www.sacred-texts.com/hin/manu/manu05.htm)
.
.
এছাড়াও বলা হচ্ছে, প্রাণিদের তৈরি করা হয়েছে উৎসর্গ করার জন্য। তাহলে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রাণি হত্যাকে কীভাবে তারা নিন্দা করতে পারে যখন তাদের ধর্মগ্রন্থই এই কাজকে বৈধ বলছে???
.
"Svayambhu (the Self-existent) himself ***created animals for the sake of sacrifices***; sacrifices (have been instituted) for the good of this whole (world); hence **the slaughtering (of beasts) for sacrifices is not slaughtering** (in the ordinary sense of the word)."
.
(The Laws of Manu, translated by George Bühler, Chapter 5, Verse 39,
source - http://www.sacred-texts.com/hin/manu/manu05.htm)
.
.
যদি ধরেও নিই যে, আমিষ খেলে উগ্রতা আসে, তাহলে এটা আমাদের মাথায় আসে না যে, যখন ছেলে, মেয়ে, নারী, পুরুষ সেজে-গুজে বেরিয়ে এক জায়গায় বসে অঞ্জলি দেয়, পুজো শেষে এক জায়গায় বসে প্রসাদ দেয়া নেয়া করে আর দিনের অন্য সময় একসাথে ঘুরে বেড়ায়, তখন তাদের মন অশান্ত হয় না??
.
আমরা মুসলিমরা মৌলবাদী, আমাদের চিন্তা অপবিত্র এসব ভাবার আগে চলুন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের research paper এর একটা অংশ দেখে নিই।
.
"এই গবেষণা সর্বপ্রথম নারীর সাথে পুরুষের সংক্ষিপ্ত মিথষ্ক্রিয়ার ফলে হরমোন সংক্রান্ত এবং আচরণগত প্রতিক্রিয়ার পরিমাপকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। গবেষণার ফলাফল পুরুষের প্রজনন সংক্রান্ত প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
.
***পুরুষ, 'ফিমেল কন্ডিশনে'(নারীর সাথে পুরুষের কথোপকথনে) baseline level এর ওপর টেস্টোস্টেরন(পুরুষের যৌন হরমোন) এর তাৎপর্যপূর্ণ বৃদ্ধি প্রদর্শন করে*** এবং এর ফলে প্রদর্শিত তার অধিক বিনম্র আগ্রহকে পরিমাপ করা হয় এবং তা আচরণের মাধ্যমে ফুটে ওঠে, যেটা 'মেল কন্ডিশনে'(পুরুষের সাথে পুরুষের কথোপকথনে) ততটা পরিলক্ষিত হয় না।
.
এছাড়াও কথোপকথনে অংশগ্রহণকারী নারীদের প্রতি যেসব পুরুষরা **অধিক 'পূর্বরাগ'(বিবাহ বহির্ভূত প্রেম) ঘটিত আচরণ** দ্বারা পরিচালিত হিসেবে পরিগণিত হয়েছে, তারা(ঐ সকল পুরুষরা) "T level(Salivary testosterone level)"[যৌন হরমোনের এক ধরণের মাত্রা নির্দেশক level] এর অধিক ধন্যাত্মক পরিবর্তন প্রদর্শন করে এবং তারা(ঐ সকল পুরুষরা) কথোপকথনে অংশগ্রহণকারী নারী সদস্যদেরকে **অধিক আকর্ষণীয় রোমান্টিক সঙ্গী হিসেবে চিহ্নিত করে।** মেল কন্ডিশনে(পুরুষের সাথে পুরুষের কথোপকথনে) এরূপ কোনো তাৎপর্যপূর্ণ সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয় না।"
.
("This study represents one of the first attempts to assess hormonal and behavioral reactions of men to brief interactions with women. Results were generally consistent with the possibility of a mating response in human males.
.
***Men in the female condition showed a significant increase in testosterone*** over baseline levels and were rated as having expressed more polite interest and display behaviors than were men in the male condition.
.
In addition, those men who were rated as having directed **more courtship-like behaviors** toward their female conversation partners also showed more positive changes in T levels and rated the female confederates as **more attractive romantic partners**. No such relationships were significant in the male condition.")
.
[Research of University of Chicago (Institute for Mind and Biology);
source - https://labs.psych.ucsb.edu/roney/james/other%20pdf%20readings/reserve%20readings/ehb.pdf]
.
.
তাহলে scientifically আমরা দেখছি যে, নারী-পুরুষ একে অপরের নিকটবর্তী হলে যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়, সে আপনি আমিষ খান বা নিরামিষ অথবা আপনি উপোসই বা থাকুন না কেন!
.
ইসলামে আমিষ খাওয়া বাধ্যতামূলক নয়, আপনি সারজীবন নিরামিষভোজী হয়েও থাকতে পারেন। কিন্তু আমিষ খাবারকেও ইসলামে অনুমোদিত করা হয়েছে কারণ আমাদের দাঁতের গঠনে আমিষভোজী ও নিরামিষভোজী উভয় প্রাণিরই যুগ্ম গঠন বিন্যাস রয়েছে। এমনকি আমিষ ও নিরামিষ উভয় ধরণের খাবার হজমের ক্ষমতাই আমাদেরকে সৃষ্টিকর্তা দিয়েছেন।
তদুপরি, ইসলামিক নিয়মে সালাত বা নামাজের সময়ই শুধু নয়, সর্বক্ষেত্রেই নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশাকে ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে এবং উগ্র আকর্ষণ বন্ধ করতে নারী ও পুরুষ উভয়কেই হিজাবের বিধান দেওয়া হয়েছে।
.
তাহলে কীভাবে কেউ বলতে পারে যে, আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে আমাদের মনে উগ্রতা আসে, অশান্তি সৃষ্টি হয়???
.
তাহলে নিজেই যাচাই করুন, নিরামিষ খাদ্য গ্রহণ করে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা উত্তম, নাকি আমিষ খাদ্যযোগে পৃথক সালাত বা নামাজ এবং অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে শালীনতা বজায় রাখা উত্তম???
.
So which one is better and pure?
.
.
আহমেদ আলি সিরিজ/হিন্দুদের আমিষ ও নিরামিষ খাদ্যের দ্বিমুখী দৃষ্টিভঙ্গি

Comments

Popular posts from this blog

মানহাজ ও মাযাহাব নিয়ে যত দ্বন্দ্বের জবাব....

[Special thanks to brother Mainuddin Ahmad for providing some important reference] . মানহাজ অর্থ পথ (path) অথবা পদ্ধতিগত বা নিয়মগত বা প্রণালিগত বিদ্যা (Methodology)। মানহাজ বললে তাই তাকে দুই ভাবে ভাবা হয় - ১) সহিহ মানহাজ, ২) ভ্রান্ত বা বাতিল মানহাজ। . সহিহ মানহা...

কৃষ্ণ কি আল্লাহর নবী ছিল?

এই প্রশ্নটা আমাকেও করা হয়েছে সম্ভবত কয়েকবার। কিন্তু প্রশ্নের উত্তরটা বড়ই জটিল। কারণ এর কোনো যথাযথ উত্তর আমাদের জানা নেই। যদি কৃষ্ণের গোপীদের সাথে লীলার কাজকে সত্য বলে...

ভগবতগীতার বর্ণভেদ নিয়ে ভক্তদের ভণ্ডামির জবাব

============================ চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ৷ তস্য কর্তারমপি মাং বিদ্ধ্যকর্তারমব্যয়ম্৷৷১৩ অর্থ:  "প্রকৃতির তিনটি গুণ এবং কর্ম অনুসারে আমি মনুষ্য সমাজে চারটি বর্ণ...