Skip to main content

মিরাজের যাত্রাকালের বৈজ্ঞানিক তাৎপর্য


মিরাজের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি আমাকে অবাক করে তার মধ্যে অন্যতম হল এর যাত্রাকাল। আমি প্রথমে মিরাজ সম্পর্কিত একটি হাদিস উদ্ধৃত করছি।
.
"আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ যার (রাযি.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ আমি মক্কায় থাকা অবস্থায় আমার গৃহের ছাদ উন্মুক্ত করা হ’ল। অতঃপর জিব্রীল (‘আ.) অবতীর্ণ হয়ে আমার বক্ষ বিদীর্ণ করলেন। আর তা যমযমের পানি দ্বারা ধৌত করলেন। অতঃপর হিকমাত ও ঈমানে ভর্তি একটি সোনার পাত্র নিয়ে আসলেন এবং তা আমার বুকের মধ্যে ঢেলে দিয়ে বন্ধ করে দিলেন।
.
অতঃপর হাত ধরে আমাকে দুনিয়ার আকাশের দিকে নিয়ে চললেন। পরে যখন দুনিয়ার আকাশে আসলাম জিব্রীল (‘আ.) আসমানের রক্ষককে বললেনঃ দরজা খোল। আসমানের রক্ষক বললেনঃ কে আপনি? জিবরীল (‘আ.) বললেনঃ আমি জিব্রীল (‘আ.)। (আকাশের রক্ষক) বললেনঃ আপনার সঙ্গে কেউ রয়েছেন কি? জিব্রীল বললেনঃ হাঁ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রয়েছেন। অতঃপর রক্ষক বললেনঃ তাকে কি ডাকা হয়েছে? জিবরীল বললেনঃ হাঁ। অতঃপর যখন আমাদের জন্য দুনিয়ার আসমানকে খুলে দেয়া হল আর আমরা দুনিয়ার আসমানে প্রবেশ করলাম তখন দেখি সেখানে এমন এক ব্যক্তি উপবিষ্ট রয়েছেন যার ডান পাশে অনেকগুলো মানুষের আকৃতি রয়েছে আর বাম পাশে রয়েছে অনেকগুলো মানুষের আকৃতি। যখন তিনি ডান দিকে তাকাচ্ছেন হেসে উঠছেন আর যখন বাম দিকে তাকাচ্ছেন কাঁদছেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ স্বাগতম ওহে সৎ নাবী ও সৎ সন্তান। আমি (রাসূলুল্লাহ) জিব্রীল (‘আ.)-কে বললামঃ কে এই ব্যক্তি? তিনি জবাব দিলেনঃ ইনি হচ্ছেন আদম (‘আ.)। আর তার ডানে বামে রয়েছে তাঁর সন্তানদের রূহ। তাদের মধ্যে ডান দিকের লোকেরা জান্নাতী আর বাম দিকের লোকেরা জাহান্নামী। ফলে তিনি যখন ডান দিকে তাকান তখন হাসেন আর যখন বাম দিকে তাকান তখন কাঁদেন।
.
অতঃপর জিব্রীল (‘আ.) আমাকে নিয়ে দ্বিতীয় আসমানে উঠলেন। অতঃপর তার রক্ষককে বললেনঃ দরজা খোল। তখন এর রক্ষক প্রথম রক্ষকের মতই প্রশ্ন করলেন। পরে দরজা খুলে দেয়া হল। আনাস (রাযি.) বলেনঃ আবূ যার (রাযি.) উল্লেখ করেন যে, তিনি [রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ] আসমানসমূহে আদাম, ইদরীস, মূসা, ‘ঈসা এবং ইব্রাহীম (‘আলাইহিমুস্ সালাম)-কে পান। কিন্তু আবূ যার (রাযি.) তাদের স্থানসমূহ নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেননি। তবে এতটুকু উল্লেখ করেছেন যে, তিনি আদম (‘আ.)-কে দুনিয়ার আকাশে এবং ইব্রাহীম (‘আ.)-কে ষষ্ঠ আসমানে পান।
.
আনাস (রাযি.) বলেনঃ জিব্রীল (‘আ.) যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিয়ে ইদরীস (‘আ.)এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করেন তখন ইদ্রীস (‘আ.) বলেনঃ মারহাবা ওহে সৎ ভাই ও পুণ্যবান নবী। আমি (রাসূলুল্লাহ) বললামঃ ইনি কে? জিবরীল বললেনঃ ইনি হচ্ছেন ইদ্রীস (‘আ.)। অতঃপর আমি মূসা (‘আ.)-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করাকালে তিনি বলেনঃ মারহাবা হে সৎ নাবী ও পুণ্যবান ভাই। আমি বললামঃ ইনি কে? জিবরীল বললেনঃ ইনি মূসা (‘আ.)। অতঃপর আমি ‘ঈসা (‘আ.)-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করাকালে তিনি বলেনঃ মারহাবা হে সৎ নাবী ও পুণ্যবান ভাই। আমি বললামঃ ইনি কে? জিবরীল (‘আ.) বললেনঃ ইনি হচ্ছেন ‘ঈসা (‘আ.)। অতঃপর আমি ইব্রাহীম (‘আ.)-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করলে তিনি বলেনঃ মারহাবা হে পুণ্যবান নাবী ও নেক সন্তান। আমি বললামঃ ইনি কে? জিবরীল (‘আ.) বললেনঃ ইনি হচ্ছেন ইব্রাহীম (‘আ.)। ইবনু শিহাব বলেনঃ ইবনু হায্ম (রহ.) আমাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, ইবনু ‘আববাস ও আবূ হাববা আল-আনসারী উভয়ে বলতেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অতঃপর আমাকে আরো উপরে উঠানো হল অতঃপর এমন এক সমতল স্থানে এসে আমি উপনীত হই যেখানে আমি লেখার শব্দ শুনতে পাই। ইবনু হায্ম ও আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অতঃপর আল্লাহ আমার উম্মাতের উপর পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করে দেন।
.
**অতঃপর তা নিয়ে আমি ফিরে আসি।**
.
অবশেষে যখন মূসা (‘আ.)-এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করি তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা‘আলা আপনার উম্মাতের উপর কী ফরজ করেছেন? আমি বললামঃ পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করেছেন। তিনি বললেনঃ আপনি আপনার পালনকর্তার নিকট ফিরে যান, কেননা আপনার উম্মাত তা আদায় করতে পারবে না। আমি ফিরে গেলাম। আল্লাহ তা‘আলা কিছু অংশ কমিয়ে দিলেন। আমি মূসা (‘আ)-এর নিকট পুনরায় গেলাম আর বললামঃ কিছু অংশ কমিয়ে দিয়েছেন। তিনি বললেনঃ আপনি পুনরায় আপনার রবের নিকট ফিরে যান। কারণ আপনার উম্মাত এটিও আদায় করতে পারবে না। আমি ফিরে গেলাম। তখন আরো কিছু অংশ কমিয়ে দেয়া হলো। আবারও মূসা (‘আ)-এর নিকট গেলাম, এবারও তিনি বললেনঃ আপনি পুনরায় আপনার প্রতিপালকের নিকট যান। কারণ আপনার উম্মত এটিও আদায় করতে সক্ষম হবে না। তখন আমি পুনরায় গেলাম, তখন আল্লাহ বললেনঃ এই পাঁচই (নেকির দিক দিয়ে) পঞ্চাশ (বলে গণ্য হবে)। আমার কথার কোন রদবদল হয় না। আমি পুনরায় মূসা (‘আ)-এর নিকট আসলে তিনি আমাকে আবারও বললেনঃ আপনার প্রতিপালকের নিকট পুনরায় যান। আমি বললামঃ পুনরায় আমার প্রতিপালকের নিকট যেতে আমি লজ্জাবোধ করছি।
.
**অতঃপর জিব্রীল (‘আ) আমাকে সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত নিয়ে গেলেন।**
.
আর তখন তা বিভিন্ন রঙে আবৃত ছিল, যার তারপর্য আমি অবগত ছিলাম না। অতঃপর আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হলে আমি দেখতে পেলাম যে, তাতে রয়েছে মুক্তোমালা আর তার মাটি হচ্ছে কস্তুরী।"
.
[সহীহ বুখারী (তাওহীদ)
অধ্যায়ঃ ৮/ সলাত (كتاب الصلاة)
হাদিস নম্বরঃ ৩৪৯
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih) http://www.hadithbd.com/share.php?hid=24185]
.
.
হাদিসটিতে প্রধান লক্ষ্যণীয় বিষয়টি দেখুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে, আসমানের বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করেছেন, এটা বর্ণনা করা হচ্ছে। এর অর্থ হল, গোটা বিশ্বজগতের বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে তিনি ফিরে এসেছেন এবং এরপর সেগুলো বর্ণনা করছেন সাহাবাদের কাছে। এখন এই ভ্রমণের জন্য তার তো কোটি কোটি বছরেরও বেশি সময় লেগে যাওয়ার কথা, কারণ গোটা বিশ্বজগতের বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করতে কোটি কোটি বছরও হয়ত কম হয়ে যাবে! সেখানে আমরা দেখতে পাই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিরাজের রাতে এই ভ্রমণ সম্পূর্ণ করে ফিরে এসেছিলেন আর তা সাহাবাদের কাছেও বর্ণনা করেছেন! এটা কীভাবে সম্ভবপর হতে পারে?
.
.
আধুনিক বিজ্ঞানে স্যার এ্যালবার্ট আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটি আসার পর আমরা জানতে পারি যে, সময় এবং স্থান দুটোই আপেক্ষিক। নিউটনের সময়ে আমরা জানতাম যে, সময় মহাবিশ্বের সব জায়গায় একই রকম। কিন্তু আইনস্টাইনের আগমনের পর আমরা আজ গাণিতিক হিসাব এবং পরীক্ষামূলক গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ পেয়েছি যে, সময় মহাবিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে আচরণ করে।
.
আইনস্টাইনের মতে, আলোর গতি মহাবিশ্বের সকল স্থানে একই রকম, এর কোনো পরিবর্তন নেই। আর কোনো বস্তুই আলোর গতিতে চলতে পারে না, বরং তার থেকে কম গতিতে চলার সামর্থ রাখে। অর্থাৎ এই মহাবিশ্বের কোনো বস্তুর নিজের এমন কোনো ক্ষমতা নেই যে, সে নিজের ক্ষমতাবলে আলোর গতিতে বা আলোর গতির চেয়ে বেশি গতিতে চলবে। সকল বস্তুরই কেবল এতটুকু ক্ষমতা রয়েছে যে, সেটি আলোর গতির চেয়ে কম গতিতে বা বড়জোর আলোর গতির কাছাকাছি চলতে পারে।
.
এখন যদি কোনো বস্তুর বা ব্যক্তির গতি এত বেশি বৃদ্ধি পায় যে, সেটি আলোর গতির কাছাকাছি গতিবেগে চলতে শুরু করে, তবে আইনস্টাইন এর রিলেটিভিটি তত্ত্ব অনুযায়ী, ওই বস্তুর বা ব্যক্তির কাছে সময় ধীরে চলতে শুরু করবে। যেমন ধরুন, যদি এক ব্যক্তি পৃথিবী থেকে আলোর গতির অর্ধেক গতিবেগে যাত্রা শুরু করে মহাবিশ্বের কোনো এক সুদূর গ্যালাক্সিতে যায় আর তারপর আবার ২ বছর পর সেই একই আলোর গতিবেগের অর্ধেক গতিবেগ নিয়ে ফিরে আসে, তাহলে দুই বছর পর পৃথিবীতে এসে সে দেখবে যে, পৃথিবীতে ২ বছরের চেয়েও অনেক বেশি সময় বাস্তবিকভাবেই পার হয়ে গেছে। এটা কাল্পনিক নয়, পুরোপুরি বাস্তব প্রমাণিত সত্য যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে "টাইম ডাইলেশন" (Time Dilation)।
.
এই বিষয়টি আরেকবার মনে করিয়ে দিই যে, যদি আলোর গতির কাছাকাছি কেউ চলে, তবে তার কাছে সময় ধীরে চলতে শুরু করবে। এর অর্থ হল, কেউ যদি আলোর গতির সমান গতিতে চলতে পারে, বা আলোর গতির চেয়ে দ্রুত গতিতে চলতে পারে, তবে তার কাছে সময় স্থির হয়ে যাবে এবং সময় আর অতিক্রম করবে না।
.
এখানেও ব্যাপারটি ঠিক সেরকম। মহান আল্লাহ বলেন,
.
سُبْحَٰنَ ٱلَّذِىٓ أَسْرَىٰ بِعَبْدِهِۦ لَيْلًا مِّنَ ٱلْمَسْجِدِ ٱلْحَرَامِ إِلَى ٱلْمَسْجِدِ ٱلْأَقْصَا ٱلَّذِى بَٰرَكْنَا حَوْلَهُۥ لِنُرِيَهُۥ مِنْ ءَايَٰتِنَآۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْبَصِيرُ
.
"পবিত্র ও মহিমাময় তিনি যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মাসজিদুল হারাম হতে মাসজিদুল আকসায়, যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বারাকাতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।"
(আল-কোরআন, ১৭:১)
.
অর্থাৎ এখানে আল্লাহর হুকুমে মিরাজের ঘটনা কেবল একরাতেই সংঘটিত হয়। সেক্ষেত্রে এই ঘটনাটিতে সময় যদি স্থির বা শুন্য হয়ে যায়, তবে এক রাতের মধ্যেই মহাবিশ্বের বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করা অসম্ভব কিছু নয়।
.
পদার্থবিজ্ঞানের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, কোনো কিছুই আলোর গতির সমান গতিতে বা তার বেশি গতিতে চলার ক্ষমতা রাখে না। কিন্তু সকল ক্ষমতার মালিক হলেন একমাত্র আল্লাহ। তিনি যদি চান, তবে তাঁর বান্দাকে আলোর গতি কেন, তার থেকেও বেশি গতিতে অন্য কোনো প্রসঙ্গ কাঠামো বা frame of reference এ নিয়ে গিয়ে সময়কে স্থির করে দিতে পারেন!!!
.
এটাই ইঙ্গিত করে যে, মুসলিম উম্মাহ এর নিকট আল্লাহর পক্ষ হতে এক বড় নিদর্শন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিরাজে গমন, যা কোনো কাল্পনিক স্বপ্ন বা গল্প নয়, বরং বৈজ্ঞানিকভাবেও বিস্ময়কর একটি ঘটনা বটে!!!
.
لَهُۥ مُلْكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِۖ يُحْىِۦ وَيُمِيتُۖ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ
.
"আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব তাঁরই। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান; তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।" [মহাগ্রন্থ আল-কোরআন, ৫৭:২]
.
====================
#আহমেদ_আলি

Comments

Popular posts from this blog

মানহাজ ও মাযাহাব নিয়ে যত দ্বন্দ্বের জবাব....

[Special thanks to brother Mainuddin Ahmad for providing some important reference] . মানহাজ অর্থ পথ (path) অথবা পদ্ধতিগত বা নিয়মগত বা প্রণালিগত বিদ্যা (Methodology)। মানহাজ বললে তাই তাকে দুই ভাবে ভাবা হয় - ১) সহিহ মানহাজ, ২) ভ্রান্ত বা বাতিল মানহাজ। . সহিহ মানহা...

কৃষ্ণ কি আল্লাহর নবী ছিল?

এই প্রশ্নটা আমাকেও করা হয়েছে সম্ভবত কয়েকবার। কিন্তু প্রশ্নের উত্তরটা বড়ই জটিল। কারণ এর কোনো যথাযথ উত্তর আমাদের জানা নেই। যদি কৃষ্ণের গোপীদের সাথে লীলার কাজকে সত্য বলে...

Permission of Adultery and Fornication in Hinduism - Remaining Part

Read the previous part here: http:// uniqueislamblog.blogspot.com /2017/11/ permission-of-adultery-and-fornication.html ?m=1 => Condemning physical relationship outside marriage: Generally physical relationship outside marriage is condemned in Hindu Philosophy. Bhagabat Gita says, "There are three gates leading to this hell-**lust**, anger, and greed. Every sane man should give these up, for they lead to the degradation of the soul." (Bhagabat Gita, 16:21) ['Bhagabat Gita As It Is' by His Divine Grace A.C. Bhaktivedanta Swami Prabhupada] This verse indicates that lust or desire outside marriage can lead one to hell if it is not maintained properly. It is further mentioned in Yajur Veda, "O God, **cast aside a lover**, **who cohabits with another's wife** ; **a paramour having illicit connection with a domestic woman** ; **an unmarried elder brother suffering from the pangs of passion** ; younger brother who has married before his elder to ...